ভোলায় লাগাতার বর্ষণে ৬৩ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ


প্রস্তুতি : সারাদেশ (প্রতিমুহূর্ত.কম)

লাগাতার বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ভয়াল রূপ ধারণ করেছে ভোলার উপকূলবর্তী এলাকা মেঘনা। এতে করে কয়েক গুণ বেশি নদী ভাঙ্গন বৃদ্ধি পেয়েছে। গত কয়ক দিনে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন ৬৩ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ।

এরমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-১ এর আওতায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৪৮ কিলোমিটার এলাকা এবং ডিভিশন-২ এর আওতায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ১৫ কিলোমিটার বাঁধ।

এদিকে ধনিয়া বালিয়াকন্দি এলাকার বাঁধের এক তৃতীয়াংশ ভেঙ্গে বর্তমানে চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বাঁধটি। যে কোন মুহুর্তে ভোলা শহর প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ভাঙ্গন কবলিত এলাকাবাসীর অভিযোগ, লোক দেখানো যে নামকাওয়াস্তে বেড়ি বাঁধের কাজ হয় সেখানে চলে পুকুর চুরিও। এতে করে ঠিকাদাররা লাভবান হলেও ভাঙন কবলিত এলাকাবাসীর কোন প্রকার উপকার হয়না।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্র মতে, ডিভিশন-১ এর মধ্যে সদরের ধনিয়া, কাচিয়া ও উত্তর দিঘলদী ইউনিয়নে আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ ১১ কিলোমিটার ও সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ ৬কিলোমিটার, বোরহানউদ্দিনের গঙ্গাপুর, হাসাননগর ও বড় মানিকায় আংশিক ২৪কিলোমিটার ও সম্পূর্ণ ৩ কিলোমিটার, দৌলতখানের সৈয়দপুর ইউনিয়নে আংশিক ৪ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

টাকার অংকে এ ক্ষতির পরিমাণ ২৫ কোটি টাকা হবে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড ।
ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার কিছু কিছু পয়েন্ট দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করছে। এছাড়াও ওই সকল এলাকাসহ শাহবাজপুর গ্যাস রক্ষা প্রকল্পের তীর সংরক্ষণ কাজের দেড় কিলোমিটার এলাকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

২২ মে বুধবার সরেজমিনে ধনিয়া ইউনিয়নের বালিয়াকান্দি ও তুলাতলী ২টি পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, সেখানকার নতুন বেড়ি বাঁধটির অধিকাংশই ভেঙ্গে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

এলাকার লোকজন আতংকে বসে আছে বাধের কাছাকাছি। তাদের মধ্যে কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ ইখতিয়ার গোলদার সাথে। তিনি বলেন, বিগত বছর গুলোতে দেখা গেছে বর্ষার পর নদী ভাঙ্গন শুরু হতে। কিন্তু চলতি মৌসুমে বর্ষা শুরুর আগেই ভাঙ্গন শরু হয়েছে এবং বর্ষায় আরো ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে। ফলে নদীর পাড়ের মানুষ চরম শংকার মধ্যে রয়েছেন। গত এক বছরে ৫ শতাধিক পরিবার ঘর-ভিটা হারিয়েছেন। তাদের অনেকেই বসবাস করছেন খোলা আকাশের নিচে।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হান্নান জানান, ভোলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় মহাসেনের, লাগাতার বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে  ৪৮ কিলোমিটার এলাকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

বাধ মেরামতের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। অনুমোনদন পেলেই তারা বাধ মেরামতের কাজ শুরু করবে বলে জানান।

এদিকে, ডিভিশন-২ এর আওতায় মোট ১৫ কিলোমিটার এলাকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এরমধ্যে আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ ৯ কিলোমিটার ও সম্পূর্ণ ১৩ দশমিক ৬ কিলোমিটার। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাগুলো হচ্ছে চরফ্যাশনের মাদ্রাস, নজরুলনগর, মুজিবনগন ও চর মোতাহান, মনপুরা উপজেলার মনপুরা ইউনিয়ন, তজুমদ্দিন উপজেলার চাচড়া ইউনিয়ন ও লালমোহন উপজেলার ধলিগৌর নগর ইউনিয়ন।

পাউবো ডিভিশন-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো: শহিদুল ইসলাম তালুকদার জানান, ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ নির্মার্ণের জন্য একটি রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই কার্যকর করা হবে।


প্রতিবেদন : অচিন্ত্য মজুমদার, ভোলা প্রতিনিধি
সম্পাদনা : জামিল আশরাফ খান, নিউজরুম এডিটর 
এএম/জেএ/২২/০৫- ১

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সালাহ্উদ্দিন লাভলুর ধারাবাহিক নাটক 'কবুলীয়তনামা'

পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট ২টি গল্প

নাচো নাচো (রিমিক্স)