কাজী নজরুল ইসলামের ১১৪ তম জন্মদিন


প্রস্তুতি : সাহিত্য (প্রতিমুহূর্ত.কম)

আজ ২৫ মে শনিবার কবি বাংলাদেশের জাতীয়  কাজী নজরুল ইসলামের ১১৪ তম জন্মদিন । বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সঙ্গীতে রয়েছে তার অসামান্য অবদান । বিদ্রোহী কবি, প্রেমের কবি, সাম্যের কবি নজরুল ইসলামের জন্ম হয়েছিল ১৮৯৯ সালের আজকের দিনে ।

বিংশ শতাব্দীর অন্যতম সেরা এই কবি দুই ছিলেন বাংলাতেই অত্যন্ত জনপ্রিয় । মুলত কবিতার মাধ্যমেই তার সাহিত্যে আত্মপ্রকাশ ঘটে । ধীরে ধীরে তিনি নিজেকে নিয়ে যান অন্য এক উচ্চতায় । কবিতা, গান, গল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস, শিশু সাহিত্যসহ বিভিন্ন ভাষার বই অনুবাদ করেছেন ।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের তার কবিতা ঝড় তুলেছে গোটা বাংলাতে । বিদ্রোহী কবিতা প্রকাশের পর তাকে ‘বিদ্রোহী কবি’ নামে আখ্যায়িত হয় । ‘বল বীর - বল উন্নত মম শির! শির নেহারি আমারি, নত-শির ওই শিখর হিমাদ্রীর!’-এই লাইনগুলোতেই কবি নিজেকে বর্ণনা করেছেন । মানুষের উপর অন্যায়, অত্যাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে তার প্রতিবাদই কবিতায় ফুটে উঠেছে । 

সঙ্গীতে কাজী নজরুল ইসলাম নতুন একটি ধারা সৃষ্টি করেছেন । তার গানে সুরের বৈচিত্র্য ও কথার কারুকার্য, আরবি-ফার্সি-উর্দু ভাষার ব্যাবহার লক্ষণীয় । শ্যামা সঙ্গীত, গজল, রাগ সঙ্গীত দিয়ে বাংলা গানকে সমৃদ্ধ করেছেন । বাংলা ভাষায় যে কয়েকজন ইসলামি গান লিখেছেন তাদের মধ্যে নজরুলের অবস্থান সবার শীর্ষে । তিনি তিন হাজারেরও বেশি গান রচনা করেছেন ।

কাজী নজরুল ইসলাম গান ও কবিতার পাশাপাশি প্রবন্ধ, গল্প ও উপন্যাসও লিখেছেন । শিশুদের জন্য ছড়া এবং বেশ কিছু অনুবাদ বইও রয়েছে ।

নজরুল ব্যাক্তি জীবনে বেশ খামখেয়ালী ছিলেন । চা পানে ছিল তার চরম আসক্তি । এক কাপ চায়ের বিনিময়ে তিনি মানুষকে কবিতা লিখে দিয়ে দিতেন । তার লেখার একটি বড় অংশই হারিয়ে গেছে বলে ধারণা করা হয় ।

কাজী নজরুল ইসলামের হাত দিয়ে উঠে এসেছে অসংখ্য শিল্পী । তিনি অনেক গুণী শিল্পীদেরই গানের গুরু ছিলেন । তিনি নিজেও রেডিওতে গান গাইতেন ও গান লিখতেন । হারমোনিয়াম ও বাঁশি বাজানোতে বেশ পটু ছিলেন ।

তার ইসলাম ও হিন্দু ধর্মে বিশদ জ্ঞান ছিল । তার ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে নানা ধরনের কথা উঠলেও তিনি সাম্প্রদায়িক ও কুসংস্কার মুক্ত ছিলেন । তবে প্রমীলা দেবীকে বিয়ে করার পর তাকে প্রায়ই কটু কথা শুনতে হত ।

মাত্র ৪৩ বছর বয়সে কাজী নজরুল ইসলাম দুরারোগ্য ব্যাধিতে আকান্ত হয়ে যান । বছরখানেক পর তিনি বাকশক্তিও হারিয়ে ফেলেন । এর পরই তার সাহিত্য জীবনের সমাপ্তি ঘটে । যে বয়সে লেখকরা পরিণত হয় সে বয়সে তিনি প্রায় কিছুই লিখেন নি । তবে তার এই ছোট্ট সাহিত্য জীবনই বাংলা ভাষায় এনেছে গৌরব ।



১৯৭২ সালে কাজী নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশে আনা হয় এবং পরবর্তীতে ১৯৭৪ সালে  তাকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেয়া হয় । ১৯৭৬ সালে এই মহান কবি মৃত্যুবরণ করেন ।

লেখা : সজল বি রোজারিও
এসআর-২৫/৫-২


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সালাহ্উদ্দিন লাভলুর ধারাবাহিক নাটক 'কবুলীয়তনামা'

পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট ২টি গল্প

নাচো নাচো (রিমিক্স)