ভোলার মানুষ ভুলেনি ভয়াল ঘূর্নিঝড় আইলার কথা



প্রস্তুতি : সারাদেশ (প্রতিমুহূর্ত.কম)

বছর পেরিয়ে সেই প্রলংকরী ঘূর্নিঝড় আইলার ৪ বছরে পা রাখলো। কিন্তু সেই দিনের কথা আছো ভূলতে পারেনি ভোলার উপকূলের মানুষ। ২০০৯ সালের ২৫ মে এই দিনে ঘূর্নিঝড় আইলা ভোলার উপকূলে আঘাত হানে। সেদিনের ঝড়ে ভোলা সদর, মনপুরা ও চরফ্যাশন উপজেলায় ৩০হাজার ঘড় বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছিল। হঠাৎ হরেই বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের প্রভাব, ঝোড়ো হাওয়াসহ চার দিনের টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছিল সেদিন ভোলার উপকূলের নিম্নাঞ্চল। প্রান হারায় ১৮জন মানুষ। সেদিনের ঝড়ে স্বজন হারানো মানুষের কান্না যেনো আজো শোনা যায় উপকূল গুলোতে। অথচ ৩বছর পেরিয়ে গেলেও ঝড়ে বিধ্বস্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর অধিকাংশই এখনও ঘুরে দাড়াতে পারেনি।

 সেদিনের সেই দুর্ভোগের কথাগুলো বলতে গিয়ে বোরহানউদ্দিন উপজেলার দক্ষিণ বাটামারা মাঝিবাড়ির মোঃ গিয়াস উদ্দিন মাঝি (৪৭) জানান, ভাইজান দুদিন দইর‌্যা না খাইয়্যা আছিলাম। না পারছি রাইনতাম, না পারছি কাম কইত্তাম। রাইতকা গুমাইতামও পারি নাই, ঘরবাড়ি সব ডুবি আছিল। এনে-ওনে রাইত কাডাইতাম।

গিয়াস উদ্দিন মাঝির মতো সেদিন এমন আরো অনেকেই খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন জাপন করেছিল। প্রলংয়নকারী সেই ঝড়ের কথা মনে করে আজো আতকে ওঠেন ওইসব উকপূলবাসী। মুহুর্তের মধ্যেই বিস্তীর্ন জনপদ যেন লন্ড ভন্ড হয়ে ধ্বংসের লীলা ভূমিতে পরিনত হয় সেদিন। শুরু হয় প্রান বাঁচাতে মানুষের দৌড়া-দৌড়ি, ছুটা ছুটি। ঝড়ে কেউ হারিয়েছেন মা-বাবা, কেউ ভাই বোন, কেউ বা পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যাক্তিকে হারিয়ে চরম কষ্টে দিন অতিবাহিত করছেন।

সেদিনের ঝড়ে ভোলা সদর, মনপুরা ও চরফ্যাশন উপজেলায় ৩০হাজার ঘড় বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছিল। লন্ড ভন্ড হয়েছিল ৪০টি গ্রাম । জলোচ্ছাস হয় ৬/৭ফুট উচ্চতায়। পানিতে ভেসে যায় কয়েক’শ মাছের ঘের। বিনষ্ট হয় হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি। প্রান হারান ১৮জন। বেড়ি বাধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয় বিস্তীর্ন জনপদ ও মানুষের ঘর বাড়ি।

ভোলার দুগর্ম কলাতলীর চর, ঢালচর, রামদাসপুর, মাঝের চর, হাজিপুর, কুকরী-মুকরী, কচুয়াখালীর চর, চর পাতিলার লক্ষাধিক মানুষ খাদ্য ও পানির অভাবে ৪/৫দিন অভূক্ত দিন কাটান। ছড়িয়ে পড়ে ডায়রিয়াসহ নানা রোগ। জেলা প্রশাসনের অপ্রতুল ত্রান তৎপরতা সবার খাগ্যে জুটেনি।

কলাতলীর চরের বাসিন্দা রমজান আলী বলেন, ৭ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছাস হয়। মুহুর্তের মধ্যেই পানিতে ঘর বাড়ি তলিয়ে যায়। সেই ঝড়ের কথা কোন দিনই ভোলার নয়।

প্রতিবেদন : অচিন্ত্য মজুমদার, ভোলা জেলা প্রতিনিধি

আরএম : ২৫/৫-০২

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সালাহ্উদ্দিন লাভলুর ধারাবাহিক নাটক 'কবুলীয়তনামা'

পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট ২টি গল্প

নাচো নাচো (রিমিক্স)