পাঞ্জাব ও চেন্নাই পাল্টে দিচ্ছে পয়েন্ট টেবিলের হিসেব-নিকেশ


প্রস্তুতিঃ স্পোর্টস (প্রতিমুহূর্ত.কম)---

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে মঙ্গলবার রাতে দুটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়।  দিনের প্রথম খেলায় কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব হারিয়ে দেয় রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরকে। রাতের খেলায় চেন্নাই সুপার কিংসের কাছে হেরে যায়  দিল্লি।

রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুর বনাম কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব :


এবারের আইপিএলে তারকাখচিত দলটির নাম রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুর। গেইল, দিলশান, কোহলি ডি ভিলিয়ার্স থেকে রামপাল, মুরালি, ভেক্টরি পর্যন্ত এই লাইনআপে আছে। গত ম্যাচে কোলকাতার কাছে হেরে আজ একটু চাপেই ছিল ব্যাঙ্গালুর আর আজকের খেলাটা ছিল গত কিছুদিন থেকে দুর্দান্ত খেলা পাঞ্জাবের বিপক্ষে।

ব্যাঙ্গালুরের চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে টস জিতে পাঞ্জাব অধিনায়ক এড্যাম গিলক্রিস্ট ফিল্ড করার সিদ্ধান্ত নেয়। দুই ব্যাঙ্গালুর ওপেনার ক্রিস গেইল ও পূজারা শুরুটা ভালোই করেন। ২২ রানে পূজারা আওয়ানার বলে আউট হবার আগে করেছিলেন ১৯ রান। গেইলও আজ শুরুর দিকে একটু সংযতই ছিলেন। কিন্তু বিরাট কোহলি যখন ক্রিজে এসে হাত খুলে মারতে শুরু করলেন তখন গেইলও ব্যাট চালালেন। কোহলি-গেইল জুটি করেন ১৩৮ রানের পার্টনারশিপ। দুজন মিলে পাঞ্জাব বোলারদের ভুগিয়েছেন টানা ১২ ওভার। গেইল ১৮তম ওভারে আউট হবার সময় ৫৩ বলে ৭৭ করেন, যাতে ৪টি চার ও ৬টি ছয়ের মার ছিল। গেইলের আউটের পর কোহলি বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি, পরের অভারেই আজহার মাহমুদের বলে এলবিডাব্লিউ হন তিনি। কোহলি ৬ চার ও ২ ছয়ে করেন ৫৭ রান। গেইল-কোহলির ঝড়ো ব্যাটিং-এ ব্যাঙ্গালুর ২০ ওভারে ৫ উইকেটের বিনিময়ে করে ১৭৪ রান।

পাঞ্জাব বোলারদের মাঝে আওয়ানা ৩টি ও আজহার মাহমুদ ২ টি উইকেট পান।

পাঞ্জাবের হারাবার কিছুই নেই কিন্তু ভালো খেলেই এই আইপিএল শেষ করতে চায়। হয়তো সেমিফাইনালে তারা খেলবে না কিন্তু কাউকে সহজে ছাড় দেবে না। আজ গিলক্রিস্ট হয়তো এই প্রতিজ্ঞা করেই মাঠে নেমেছিল। একসময়ে বিশ্বক্রিকেটের সব নামীদামী বোলারদের ত্রাস এই ব্যাটসম্যান এবারের আইপিএলে যেন একটু মলিনই ছিলেন তবে তিনি ফিরে আসবেন এটা সবাই জানতো। ২য় ওভারেই শন মার্স বিদায় নিলেও জয়টাকে সহজ করেছেন আজহার-গিলক্রিস্ট জুটি। আজহার মাহমুদ ৬১ রান করে আউট হলেও আজ ব্যাট ছাড়েননি গিলি। মাহমুদের ৪১ বলের এই ইনিংসে ছিল ৮টি চার ও ১টি ছয়ের মার। গিলক্রিস্ট ৮৫ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে গিয়েই ব্যাট ছেড়েছেন। ৫৪ বলে খেলা এই ইনিংস বলে দিচ্ছে আজ কতটা বিধ্বংসী ছিলেন তিনি। মেরেছেন ১০টি চার ও ৩টি ছয়, স্ট্রাইক রেট ১৮৫!!! গিলক্রিস্ট ঝড়েই পাঞ্জাব ১৮.১ ওভারেই ম্যাচ জেতে। গিলি-মাহমুদ জুটিতে পাঞ্জাবের রান আসে ১১৮।

ব্যাঙ্গালুর বোলারদের আজ পাত্তাই দেয়নি পাঞ্জাব। ইনজুরি থেকে ফিরে আসা জহির খান ১ উইকেট নেন। এছাড়া বিনয় কুমার ও আনাদকাঁদও ১টি করে উইকেট পান।

‘প্লেয়ার অফ দ্যা ম্যাচ’ পুরষ্কার পান পাঞ্জাব অধিনায়ক এড্যাম গিলক্রিস্ট।

গত ম্যাচে কোলকাতার বিপক্ষে হার, আজ পাঞ্জাবের বিপক্ষে হার সব মিলিয়ে ব্যাঙ্গালুরের প্লে অফে খেলার হিসেবটা একটু জটিলই করে দিচ্ছে।



চেন্নাই সুপার কিংস বনাম দিল্লি ডেয়ারডেভিল :


দিনের অন্য খেলায় মুখোমুখি হয় চেন্নাই ও দিল্লি।

টস জিতে চেন্নাই ২০ ওভারে ১৬৮ রান করে। চেন্নাইয়ের শুরুটা সবসময়ই ভালো হয়। আজও মাইক হাসি ও মুরালি বিজয় মিলে করলেন ৬১ রানের জুটি। বিজয় ৩০ (২৩ বলে) ও হাসি ২৭ (২৭ বলে) রানে আউট হবার পর দলের হাল ধরেন অধিনায়ক ধোনী। ৩৫ বলে খেলা ৫৮ রানেই এই অপরাজিত ইনিংসে ছিল ৪টি ছয় ও ২টি চার,  সেই সাথে ছিল ট্রেডমার্ক হেলিকাপ্টার শর্ট। শেষেরদিকে জাজেদা ১৭ বলে ২৪ ও ব্রাভ ৮ বলে ১২ করলে চেন্নাইয়ের স্কোর দাঁড়ায় ১৬৮।

দিল্লির বোলারদের মাঝে জাদভ ২টি ও মারওয়ে রাইনার উইকেটটি পান।

১৬৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দিল্লি শূন্য রানেই শেবাগের উইকেটটি হারায়, বোলারের নাম মহিত শর্মা। কোণাঠাসা দিল্লীকে চাপ থেকে বেরিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করেন চাঁদ ও বোথা। ৪৯ রানে মাঝেই চাঁদ (১৬ রান) ও বোথা (২৩ রান) আউট হলে দলের ভার দায়িত্ব নেন অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। সবার প্রত্যাশা ছিল প্রতিপক্ষ চেন্নাইয়ের অধিনায়কের মতো ওয়ার্নারও একটি ইনিংস খেলে দলকে জেতাবেন। চেষ্টাও করেছিলেন তিনি, কিন্তু ক্রিজের ঐ প্রান্ত থেকে আসছিলো না কোন সহযোগিতা। ৩৭ বলে ৪৪ করে ওয়ার্নার আউট হবার পর দ্রুতই ভেঙ্গে পড়ে দিল্লির ব্যাটিং লাইনআপ। ২০ ওভারে ৯ উইকেটে তারা ১৩৫ করে। চেন্নাই জয় পায় ৩৩ রানে।

চেন্নাই বোলারদের মাঝে মরকেল ৩টি, মহিত শর্মা,আশ্বিন, ব্রাভো ২টি করে উইকেট পান।

ম্যাচ অফ দ্যা ম্যাচ হন চেন্নাই দলপতি মহেন্দ্র সিং ধোনী।

চেন্নাই আইপিএলে সবচেয়ে সফল দল। আইপিএলের ৬টি সংস্করণের মাঝে চেন্নাই-ই একমাত্র দল যারা ৪ বার ফাইনাল খেলেছে, ২ বার ট্রফি নিজের ঘরে তুলেছে। এবারের লক্ষ্যটাও নিশ্চয় ট্রফির দিকেই, আর সেইদিকেই পরিকল্পনা মাফিক এগুচ্ছে ‘ম্যান ইন ইয়োলো’-রা।

প্রতিবেদনঃ নিপুণ কাওসার

এনকেঃ১৫/০৫-০৭

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সালাহ্উদ্দিন লাভলুর ধারাবাহিক নাটক 'কবুলীয়তনামা'

পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট ২টি গল্প

নাচো নাচো (রিমিক্স)