হাসপাতালে কেমন আছেন রেশমা ?

হাসপাতালে কেমন আছেন রেশমা ? 



প্রস্তুতি : জাতীয় (প্রতিমুহূর্ত.কম)--

সাভারের ধসে পড়া রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে  ১৭ দিনের মাথায় অবিশ্বাস্য ও অলৌকিকভাবে বেঁচে থাকা রেশমাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এ মুহূর্তে সাভার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তার চিকিৎসা চলছে। 

হাসপাতালে আানার পরপরই তাকে স্যালাইন দেওয়া হয়। শুধু পানি খেয়ে ১৭ দিন বেঁচে থাকা রেশমাকে তরল খাবার খেতে দেওয়া হচ্ছে । তার চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড করা হয়েছে। সিএমএইচে রেশমার সাথে তার মা ও বোন আসমা রয়েছেন।

সংবাদ মাধ্যমের কাছে রেশমা বলেন, আমি একটু একটু করে পানি খেয়ে বেঁচে ছিলাম। নিঃশ্বাস নিতে পারছিলাম।এদিক সেদিক ফেলে দেওয়া কিছু খাবার ছিল, তাই খেতাম। মাঝেমাঝে বিভিন্ন ফুটো থেকে ফোঁটায় ফোঁটায় পানি পড়ত। এসব খেয়েই বেঁচে ছিলাম। শেষের দুই দিন কিছুই খাওয়া হয়নি। খাবার শেষ হয়ে গিয়েছিল।
ভবন ধসের ৪০৮ ঘণ্টা পর ধসে যাওয়া রানা প্লাজা থেকে উদ্ধার রেশমা আরো বলেন, উদ্ধারকর্মীরা যখন উদ্ধার কাজ চালাচ্ছিলেন, তখন আমি বড় বড় যন্ত্রের শব্দ শুনতে পেতাম। শব্দ শুনে আমি বিশ্বাস করি, আল্লাহ হয়তো আমাকে এখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যাবেন।
শারীরিকভাবে অসম্ভব দুর্বল হয়ে পড়ার কারণে চিকিৎসকরা রেশমাকে বেশি কথা বলতে নিষেধ করেছেন। তাকে পুরোপুরি বিশ্রাম ও ঘুমানোর পরামর্শ দিয়েছেন। হাতেপায়ে আঘাত পাওয়ায় তাকে বেদনানাশক ওষুধ ও ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশনের অধিনায়ক মেজর জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী সংবাদ সম্মেলনে জানান, সাভারের ভবন ধসের সময় রেশমা রানা প্লাজার তৃতীয় তলার পোশাক কারখানায় কর্মরত ছিলেন। ধসের সময় তার সঙ্গে আরো তিন পোশাক শ্রমিক ছিলেন, যাদেরকে পরে মৃত উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেল ৪টা ২৫ মিনিটে সেনাবাহিনী ও দমকলের একটি চৌকস দল তাকে উদ্ধার করে। উদ্ধারের পর সেনাবাহিনীর একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সাভার সিএমএইচ এ নিয়ে যাওয়া হয়। 
উদ্ধারকর্মী রাজ্জাক  জানান, একটি প্লাস্টিকের পাইপ নাড়িয়ে নিজের অবস্থান জানান দেন রেশমা। শুকনো খাবার খেয়ে তিনি বেঁচে থাকলেও গত ২ দিনে কোন খাবার পাননি তিনি। সন্ধান পাওয়ার পর রেশমাকে পানি ও বিস্কুট খেতে দেওয়া হয়। তবে বিপদের আশংকায় তাকে অক্সিজেন দেওয়া হয়নি।
এর আগে শুক্রবার বেলা পৌনে ৩ টার দিকে তার সন্ধান পায় উদ্ধারকর্মীরা। তিনি অক্ষত অবস্থায় ধসে পড়া ভবনের মসজিদের ভেতরে আটকে ছিলেন।
রেশমার গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে তুলসিবাড়ি গ্রামে। তারা তিন বোন, দুই ভাই। সবার ছোট রেশমা। সাত মাস আগে স্বামী রাজ্জাক তাকে ছেড়ে চলে যান।

রানা প্লাজার তৃতীয় তলায় নিউ ওয়েভ বটমস নামের কারখানায় সুইং অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন রেশমা। এখানে তিনি দেড় বছর ধরে কাজ করে আসছেন।
উল্লেখ্য, গত ২৪ এপ্রিল সকাল পৌনে নয়টার দিকে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ৮তলা রানা প্লাজা ধসে পড়ে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত এক হাজার ৪৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
 আরএম-১০/৫-১

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সালাহ্উদ্দিন লাভলুর ধারাবাহিক নাটক 'কবুলীয়তনামা'

পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট ২টি গল্প

নাচো নাচো (রিমিক্স)