আন্তর্জাতিক উদ্যোগে বাংলাদেশে পোশাক-শিল্পের নিরাপত্তা






প্রস্তুতি : আন্তর্জাতিক (প্রতিমুহূর্ত.কম)


বাংলাদেশের পোশাক-শিল্পের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি চুক্তির ব্যাপারে একমত হয়েছে এইচঅ্যান্ডএম, সিঅ্যান্ডএ, প্রাইমার্ক, জারা, টেস্কোসহ আরো বেশকিছু ইউরোপীয় প্রতিষ্ঠান।

সমঝোতায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশের যেসব কারখানা থেকে এই নামীদামী প্রতিষ্ঠানগুলো পোশাক ক্রয় করবে সেসব কারখানা তারা নিয়মিত পরিদর্শন ও প্রশিক্ষণের আয়োজন করবে।

যে প্রতিষ্ঠান এ চুক্তি লংঘন করবে, অর্ডার বাতিলের পাশাপাশি সেসব প্রতিষ্ঠানের  বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলা হয়েছে।

সাভারে রানা প্লাজা ধসের তিন সপ্তাহ পরেই এ ধরনের একটি চুক্তির উদ্যোগ নেওয়া হলো।

বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিত ও সেগুলো স্বাধীনভাবে পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা ও এই নিরাপত্তা পরিদর্শন বাবদ খরচ দিতে বড় বড় ব্র্যান্ডগুলোকে বাধ্য করার লক্ষে, আন্তর্জাতিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইউনি গ্লোবাল ইউনিয়ন” এবং “ইন্ড্রাস্ট্রি-অল গ্লোবাল ইউনিয়ন” নামে দুটো ক্যাম্পেইন গ্রুপের তৈরি খসড়ায় স্বাক্ষর করার জন্য ১৫মে বুধবার পর্যন্ত সময় দেয়া হয়

ইন্ডাস্ট্রি-অল গ্লোবাল ইউনিয়নের” পরিচালক জেনি হোল্ডক্রফ্ট বলেছেন, এই চুক্তির একটা উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে, এটি নামকরা ব্র্যান্ড এবং আন্তর্জাতিক ট্রেড ইউনিয়নগুলোর একটা যৌথ উদ্যোগ, এতে সমন্বয়কারী হিসেবে আন্তর্জাতিক শ্রমসংস্থা বা আইএলও-এর একটা বলিষ্ঠ ভূমিকা থাকবে। এই চুক্তির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, চুক্তি স্বাক্ষরকারী ব্র্যান্ডগুলোর এটি মেনে চলতে আইনগত বাধ্যবাধকতা।

তিনি আরো জানিয়েছেন, এই চুক্তি অনুযায়ী ব্রান্ডগুলো যেসব বিষয় মেনে চলার অঙ্গীকার করবে, তা  নিয়ে কোন বিরোধ দেখা দেয়, তখন এসব কোম্পানির হেডকোয়ার্টার যে দেশে, তাদের সে দেশের আদালতে নেওয়া হবে।

 জেনি আরও বলেন, '' আমরা আশা করবো যাতে বিষয়টি অতদূর না গড়ায়, কারণ এটি একটি সহযোগিতামূলক চুক্তি। এর উদ্দেশ্য বাংলাদেশের কারখানাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সেগুলো স্বাধীনভাবে পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা, আর এই নিরাপত্তা পরিদর্শনের খরচ দিতে বড় বড় ব্র্যান্ডগুলোকে বাধ্য করা।''

বাংলাদেশের গার্মেন্টস কারখানায় নিরাপত্তার জন্য এর আগেও এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, বিশেষ করে তাজরীন ফ্যাশন্সে গত বছরের অগ্নিকাণ্ডের পর আগের উদ্যোগের সাথে সর্বশেষ এই সমঝোতার তফাৎ সম্পর্কে জেনি হোল্ডক্রফ্ট বলেন, "এবার সম্মিলিতভাবে এই নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করা হচ্ছে। অতীতে টেসকো, প্রাইমার্ক বা এইচ এন্ড এমের মতো ব্র্যান্ড বাংলাদেশের কারখানাগুলো মনিটরিং এর জন্য তাদের মতো করে এককভাবে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের যেভাবে একের পর এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে, তাতে বোঝা যায় এই ব্যবস্থা একেবারেই অকার্যকর। এখানে সবার একটি সম্মিলিত উদ্যোগ দরকার।"

কারখানাগুলো স্বাধীনভাবে পরিদর্শনের ব্যবস্থার দরকার বলে তিনি জানান, এই পরিদর্শন যেন নিয়মিত হয়, সেটার নিশ্চিত করতে তদারকিরও প্রয়োজন, যার জন্য অনেক অর্থের দরকার। এই চুক্তির অধীনে ব্র্যান্ডগুলো সেই অর্থেরই যোগান দেবে

ইন্ডাস্ট্রি-অল গ্লোবাল ইউনিয়নের মুখপাত্র জেনি হোল্ডক্রফ্ট বলেন, "এই চুক্তির অধীনে একটা স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করা হবে। চুক্তিতে যেসব ব্র্যান্ড স্বাক্ষর করেছে, কমিটিতে তাদের প্রতিনিধি থাকবে, আন্তর্জাতিক ট্রেড ইউনিয়নগুলোর প্রতিনিধি থাকবে। এই কমিটি কারখানা পরিদর্শনের জন্য যোগ্য নিরাপত্তা পরিদর্শকদের নিয়োগ করবে। অন্যান্য কর্মচারি নিয়োগ করবে।''

জেনি হোল্ডক্রফ্ট আরো জানান, এই পরিকল্পনার বিস্তারিত এখনো ঠিক হয়নি। কিন্তু সবাই চুক্তিতে অঙ্গীকার করছে যে কারখানা পরিদর্শনের একটা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে, এবং স্টিয়ারিং কমিটির মাধ্যমেই তার তদারকি করা হবে।

 সূত্র : ইন্টারনেট
প্রতিবেদন : আতিক আহম্মেদ অর্পণ
সম্পাদনা : হাসান ইমাম
এএ/১৬/৫-১

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সালাহ্উদ্দিন লাভলুর ধারাবাহিক নাটক 'কবুলীয়তনামা'

পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট ২টি গল্প

নাচো নাচো (রিমিক্স)