সাভারে বহুতল ভবন ধসে শতাধিক প্রাণহানি

সাভারে বহুতল ভবন ধসে শতাধিক প্রাণহানি

প্রস্তুতি : জাতীয় (প্রতিমুহূর্ত.কম/ protimuhurto.com) ---

সাভার বাসষ্ট্যান্ডে রানা প্লাজা নামে ৮ তলা একটি মার্কেট বুধবার সকাল ৯ টার দিকে ধসে পড়েছে।  ভবন ধসে পড়ার ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গেছে। । আরো অগনিত লাশ চাপা পড়ে আছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ এখনো জীবিত আছেন বলে ধারনা উদ্ধারকর্মীদের।

সাভারে এনাম মেডিকেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মনিরুজ্জামান দুপুর ১টা ১০ মিনিটে সাংবাদিকদে হাসপাতালের মর্গে ৪৫টি লাশ থাকার কথা জানালেও সাভারে কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে নিয়োজিত ডিবির ঢাকা জেলার পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান বলেছেন, এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপতালসহ সাভারের বিভিন্ন ক্লিনিক, হাসপাতাল ও থানায় মোট ৯৭টি লাশ পাওয়া গেছে।

ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, দায়িত্বে অবহেলার জন্য সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আহত অবস্থায় প্রায় তিন শতাধিক ব্যক্তিকে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। সেনা বাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ সাধারণ মানুষ উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সেনাবাহিনীর ৪টি ইউনিটকে উদ্ধারকাজে নিয়োজিত করা হয়েছে। সকাল সোয়া ৯টার থেকে সেনাবাহিনী উদ্ধার কাজে ঝাপিয়ে পড়েন।

ঘটনার পর বিএনপির হরতাল সাভার এলাকায় শিথিল করা হয়েছে। নিহতের ঘটনায় শোক জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।

বুধবার সকাল ৯টার দিকে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডে রানা প্লাজা নামের ৮ তলা ভবনটি বিকট শব্দে ধসে পড়ার পর পরই স্থানীয়রা প্রথমে উদ্ধার কাজে ঝাপিয়ে পড়ে।

দুর্ঘটনার পর হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় জড়ো হওয়ায় ঢাকা-আরিচা সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। পরে উদ্ধার কাজে যোগ দেয় পুলিশ, র‌্যাবসহ অন্যান্যরা। ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারীরা দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৩০টি লাশ এবং ২ শতাধিক ব্যক্তিকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেছে বলে জাস্ট নিউজকে নিশ্চিত করেছেন সাভার উপজেলা নির্বাহী অফিসার কবির হোসেন।

ঢাকা জোনের এডিসি মিজানুর রহমান জাস্ট নিউজকে বলেছেন, সেনা বাহিনী, দমকলের সহায়তায় উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে ধ্বংসযজ্ঞের ব্যাপকতা এতোটাই বিস্তৃত যে সর্ব সাধারণের সহযোগিতা ছাড়া ভালোভাবে উদ্ধার তৎপরতা চালানো সম্ভব নয়।

উদ্ধার হওয়া শ্রমিক সামিউল আলম জানান, রানা প্লাজায় ৩ থেকে ৮তলা পর্যন্ত মোট ৫টি গার্মেন্টস রয়েছে। এই কারখানাগুলোতে প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক কাজ করে বলে তিনি জানান। তবে মঙ্গলবার ভবনটিতে ফাটল দেখা দিলে পুরো ভবনটি বন্ধ ঘোষণা করে মার্কেট কর্তৃপক্ষ।

ভবনটির মালিক পৌর যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহব্বায়ক মো. সোহেল রানা। ভবনটিতে ফাটল দেখা দেয়ার পর তিনি মঙ্গলবার সবাইকে আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, এতে কোন সমস্যা হবে না, সামান্য একটু প্লাস্টার খসে পড়েছে মাত্র। মঙ্গলবার এই ভবনটিতে ফাটল দেখা দেয়ার পর মঙ্গলবার দুপুরে ভবনটি  ঘুরে দেখেন স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

স্থানীয় প্রকৌশলী আব্দুর রাজ্জাক মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, ভবনটির নিরাপত্তার স্বার্থে বুয়েট থেকে প্রকৌশলী এনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা প্রয়োজন। তা না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সাভার থানা পুলিশ জানিয়েছে, অল্প সময়ের মধ্যে মূল খুঁটি ও সামনের দেয়ালের অংশবিশেষ ছাড়া পুরো কাঠামোটিই ভেঙে পড়েছে। এ সময় আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক।

ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী, জানান,  আমি দোকানে বসেছিলাম।  হঠাৎ বিকট শব্দ পেয়ে পেছনে তাকিয়ে দেখি ধুলার ঝড়ের মতো উঠল।  আর চোখের পলকে ভবনটি ধসে পড়ল। ভবনটির প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় ইলেকট্রনিক্স, কম্পিউটার, প্রসাধন সামগ্রী ও কাপড়ের মাকের্ট এবং ব্র্যাক ব্যাংকের একটি শাখা ছিল। আর তৃতীয় তলার নিউ ওয়েভ বটমস লিমিটেড, চতুর্থ তলার প্যান্টম এ্যাপারেলস লিমিটেড, পঞ্চম তলার প্যান্টম ট্যাক লিমিটেড ও ষষ্ঠ তলার ঈথার টেঙটাইল লিমিটেডে পাঁচ থেকে ছয় হাজার শ্রমিক কাজ করতেন বলে স্থানীয়রা জানান।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সালাহ্উদ্দিন লাভলুর ধারাবাহিক নাটক 'কবুলীয়তনামা'

পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট ২টি গল্প

নাচো নাচো (রিমিক্স)