সাভারে ১৪২টি মৃতদেহ উদ্ধার, আটকা আছেন কয়েকশ'
সাভারে ১৪২টি মৃতদেহ উদ্ধার, আটকা আছেন কয়েকশ'
প্রস্তুতি : জাতীয় (প্রতিমুহূর্ত.কম/ protimuhurto.com) ---সাভার রানা প্লাজার ধ্বংশ স্তুপ থেকে ২৪ এপ্রিল বুধবা রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ১৪২টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এসব মৃতদেহ সাভার অধরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ও এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। এর মধ্যে স্কুলে ৭০টি এবং হাসপাতালে ৫০টি মৃতদেহ। হাসপাতালে রাখা মৃতদেহগুলোর নাম-পরিচয় দেয়ালে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ৪৮টি লাশ শনাক্ত করে স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আহত ও নিহতদের শনাক্ত করতে ছুটে এসেছেন শত শত স্বজনরা। গভীর রাতেও অসংখ্য মানুষ নিখোঁজ স্বজনদের জন্য অপেক্ষায় আছে।
প্রায় এক হাজার শ্রমিক চিকিৎসাধীন রয়েছে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পঙ্গু হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে।
এখনো ধসে যাওয়া ভবনের নিচে অসংখ্য মানুষ আটকে আছেন। তাদের উদ্ধারে তৎপর রয়েছে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, আনসার, র্যাব, পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন। আধুনিক পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি না থাকায় এবং আলোর স্বল্পতায় উদ্ধার কার্যক্রম চলছে ধীরগতিতে। এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন আটকে পড়াদের স্বজন ও সাধারণ মানুষরা। উদ্ধারকর্মীদের চেয়ে সক্রিয় ভূমিকায় রয়েছে সাধারণ মানুষরা।
বুধবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডের পাশে রানা প্লাজা নামের বহুতল ভবনটি ধসে পড়ে। ভবনটির মালিক স্থানীয় যুবলীগ নেতা সোহেল রানা স্তুপের নিচে আটকে ছিলেন। পরে তাকে উদ্ধার করা হলে তিনি পুলিশের সহায়তায় এলাকা ত্যাগ করেন। তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। রানা প্লাজার প্রথম ও দ্বিতীয় বিপণী বিতান এবং তৃতীয় থেকে অষ্টম তলা পর্যন্ত পোশাক কারখানা। এসব ফ্লোরে পাঁচটি কারখানায় কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ করতেন। নবম তলার নির্মাণ কাজ চলছিল।
বেঁচে যাওয়া শ্রমিকরা জানিয়েছেন, তাদের জোর করে পোশাক কারখানায় হয়েছিল। তারা ভবনের ভেতরে প্রথমে ঢুকতে না চাননি। কারণ আগের দিনই ভবনটির পিলার ধসের ঘটনা ঘটে।
বেলা বাড়ার সাথে সাথে মরদেহের সারি ততই দীর্ঘ হয়েছে। সাভার অর্ধ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে ও এনাম মেডিকেলে এ মরদেহ রাখা হচ্ছে। রানা প্লাজার ধ্বংসস্তুপ আর মরদেহ দেখার জন্য আত্মীয় স্বজনদের পাশিপাশি হাজার হাজার নারি-পুরুষের ঢল নেমেছিল গভীর রাত পর্যন্ত ঢাকা -আরিচা মহাসড়কে। এ যেন শোকের মিছিল। এত মরদেহ এক সঙ্গে কেউ দেখেনি। সবার চোখ মুখে শুধুই শোকের ছাপ আর বেদনার অশ্রুজল। স্তম্ভিত সারাদেশের মানুষ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন