সান্ডা আর গুইসাপ নিয়ে হঠাৎ কেন শোরগোল?
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে যে কোনো ঘটনাই এখন দ্রুত দেশ থেকে
দেশে ছড়িয়ে পড়ে। সম্প্রতি প্রবাসী বাংলাদেশিদের
‘সান্ডা শিকার’ এর কিছু ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওগুলোতে দেখা যাচ্ছে, মরুর বালির মধ্যে প্রবাসীরা
দৌড়ে বেড়াচ্ছেন সান্ডা ধরতে। কেউ বলছেন, ‘ভাই, এই সান্ডা না ধরতে পারলে চাকরি যাবে’,
আবার কেউ বলছেন, ‘কফিল বলেছে, সান্ডা না পেলে ভিসা ক্যানসেল।’ এই ভিডিওগুলো তারা যে
মজা করে বানিয়ে পোস্ট করেছেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
অদ্ভূত প্রাণী সান্ডাকে এই ভিডিওগুলোই আলোচনায় নিয়ে এসেছে। এরই মধ্যে আমাদের রংপুরের পীরগাছায় সান্ডা ভেবে
একটি গুইসাপ আটকে রেখে তা খাওয়ার আয়োজন করার খবর পাওয়া যায়। পরে অবশ্য গুইসাপটিকে নিরাপদ স্থানে অবমুক্ত করা
হয়। গত শুক্রবার (১৬ মে) খানপুকুর গ্রামে আবু
নাঈম রাহাদের বাড়ির গোয়ালঘর থেকে সান্ডা ভেবে একটি গুইসাপ ধরেন কয়েকজন তরুণ। এ খবর
পেয়ে ওয়াইল্ডলাইফ স্ন্যাক অ্যান্ড রেসকিউ টিম ইন বাংলাদেশের সদস্যরা সেখানে যান এবং গুইসাপটি
উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে অবমুক্ত করেন। এদিকে ফেসবুকে এক যুবকের ছবি পোস্ট
করে বলা হচ্ছে, সান্ডা ভেবে গুইসাপ খেয়ে সে এখন হাসপাতালে। অবশ্য এর সত্যতা সম্পর্কে
নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সান্ডা আর গুইসাপ মোটেও এক প্রাণি নয়। তবে দুটি ভিন্ন প্রজাতির সরীসৃপ
প্রাণীর মধ্যে দেখতে কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সান্ডা হলো মরুভূমির নিরীহ তৃণভোজী প্রাণি।
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জলবায়ু সান্ডার জীবনধারণের জন্য একেবারেই উপযুক্ত নয়।
তাই দেশে সান্ডার দেখা মেলার প্রশ্নই ওঠে না। তৃণভোজী হওয়ায় ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী
সান্ডা খাওয়া হালাল। মহানবী (সা.) নিজে না
খেলেও সাহাবিরা যখন এর মাংস খেয়েছেন, তখন তিনি নিষেধ করেননি।
গুইসাপ হলো নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের মাংসাশী প্রাণী।বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়া
ও দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চলে এর আবাস। নামের মধ্যে সাপ থাকলেও এটি মোটেও সাপ নয়,
বরং সাপের শত্রু। সাপ,ইঁদুর, ব্যাঙ, কেঁচো, পোকামাকড় ইত্যাদি খেয়ে গুইসাপ বেঁচে থাকে। ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী, গুইসাপের মাংস
খাওয়া হারাম। কারণ এটি শিকারি এবং এর তীক্ষ্ণ দাঁত ও বিষাক্ত লালা রয়েছে। বাংলাদেশের
বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী গুইসাপ ধরা, মারা, বিক্রি বা খাওয়া সম্পূর্ণ
নিষিদ্ধ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন