জাতীয়

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে প্রধান দুই দলের সংলাপ !

প্রস্তুতি : রাজনীতি (প্রতিমুহূর্ত.কম)

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশ সফররত জাতিসংঘের রাজনীতি বিষয়ক সহকারী মহাসচিব ওসকার ফার্নান্দেজ তারানকোর কয়েক দফা বৈঠকের পর প্রধান দুই দলের মধ্যে সংলাপের সম্ভাবনা জোরদার হয়েছে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট নিরসনে জাতিসংঘের প্রচেষ্টার প্রশংসা করে সংলাপে রাজি হয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়া। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার বিএনপি পূর্ব নির্ধারিত সমাবেশ বাতিল করেছে।  স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নেয়া বুধ ও বৃহস্পতিবার হরতাল ডাকা সিদ্ধান্ত থেকেও বিএনপি সরে এসেছে।


জাতিসংঘের প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছে, এমন দলগুলোর সমন্বয়ে একটি অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে এমন আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বিরোধী দলীয় নেত্রীকে।  আলোচনার মাধ্যমে সংবিধানের প্রতি সামঞ্জস্য রেখে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান ও প্রক্রিয়ায় পৌঁছানো যাবে এমন আশ্বাসের ভিত্তিতেই বিএনপি সংলাপে রাজি হয়েছে বলে জানা গেছে।


এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লিখিতভাবে আনুষ্ঠানিক চিঠির মাধ্যমে খালেদা জিয়ার কাছে সংলাপের প্রস্তাব পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টদের। মঙ্গল বা বুধবার আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে খালেদার কাছে লিখিত প্রস্তাব যেতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

এজন্য একটি খসড়া চিঠি এরই মধ্যে তৈরি করা হয়েছে বলে সূত্রটি জানায়। চিঠিতে আগামী নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা কেমন হবে বা চলমান সংকট নিরসন বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে বলে
জানা গেছে।

বাংলাদেশে সফররত জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো ঢাকায় অবস্থানকালেই ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে সংলাপের চিঠি বিরোধী নেত্রীর কাছে পৌঁছাবে বলে সূত্র জানিয়েছে।

বাংলাদেশে সফররত জাতিসংঘের এ দূত ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়া, জাতীয় সংসদের স্পিকার, নির্বাচন কমিশন, আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও অন্যন্য দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে আসন্ন নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রনের বিষয়ে জাতিসংঘের আগ্রহের কথা তুলে ধরেন এবং সমস্যা সমাধানে রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপের তাগিদ দেন তারানকো।
জাতিসংঘের রাজনীতি বিষয়ক সহকারী মহাসচিব ওসকার ফার্নান্দেজ তারানকো আজ মঙ্গলবার বিরোধী নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দেয়া মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন।

 রিপোর্ট : রুদ্র মাহমুদ
আরএম/১৩/৫-৭


 ----------------------------------------------------------------------------------------------------------

 

 ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’ মোকাবেলায় চট্টগ্রাম বন্দরে এলার্ট-২ 

 প্রস্তুতি : জাতীয় (প্রতিমুহূর্ত.কম) ---

ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’ মোকাবেলায় সমুদ্র বন্দরে ৪ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করার পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বন্দরে এলার্ট-২ জারি করা হয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য দুটি কন্ট্রোল রুম খুলেছে।  বহিনোঙ্গরের সব জাহাজকে সতর্ক করা হয়েছে।


বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় 'মহাসেন' উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। কক্সবাজার থেকে এক হাজার ৩০৫ কিলোমিটার দূরে 'মহাসেন' অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড়টি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর- উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। নিম্নচাপ থেকে শনিবার সৃষ্ট এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সমুদ্রবন্দরে ৪ নম্বর সতর্কতা সঙ্কেত জারি করা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর দেশের সমুদ্র বন্দরগুলোতে ৪ নম্বর সতর্ক সংকেত জারির পর সোমবার বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বিশেষ সতর্কতামূলক এলার্ট-২ জারি । বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল নিজাম উদ্দিন আহমদ’র সভাপতিত্বে বন্দর বোর্ড রুমে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ডিসি পোর্ট সাইফুল ইসলাম, নৌ-বাহিনী, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, কোস্ট গার্ড প্রতিনিধি ও চট্টগ্রাম বন্দরের সকল বিভাগীয় প্রধানরা । 

বৈঠকের পর বন্দর সচিব সৈয়দ ফরহাদ উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, সমুদ্র বন্দরে ৪ নম্বর সতর্কতা সংকেত জারি করলে বন্দরে এলার্ট-২ জারি করা হয়। আর এলার্ট-২ জারি করলে উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক আহ্বান করতে হয়। সে অনুযায়ী বৈঠকে ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’ মোকাবেলায় আলোচনা করা হয়।

তিনি বলেন,‘মহাসেন‘ মোকাবেলায় বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি শুরু করেছে। এরই মধ্যে বহিনোঙ্গরে লাইটারেজ জাহাজগুলোকে সতর্ক অবস্থায় থাকার জন্য কর্ণফুলী নদীতে মাইকিং করা হয়েছে।‘
তিনি জানান, ‘মহাসেন’ মোকাবেলায় এরই মধ্যে বন্দর কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য দুটি কন্টোল রুম খোলা হয়েছে।

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রস্তুত থাকার জন্য আদেশে দেয়া হয়েছে। প্রস্তুত করা হয়েছে সাইক্লোন শেল্টার।
তিনি বলেন, ‘আগামী কাল মঙ্গলবার মহাসেন’র গতিপথ পর্যবেক্ষণ করে কাজ বন্ধের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এখনো বন্দরে আবহাওয়া স্বাভাবিক রয়েছে তাই কাজ চলছে।’

আরএম/১৩/৫-২
----------------------------------------------------------------------------------

জামায়াতের হরতাল : রাজধানীতে বিক্ষিপ্ত মিছিল-বোমাবাজি



প্রস্তুতি :  জাতীয় (প্রতিমুহূর্ত.কম) ---


জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায়ের প্রতিবাদে জামায়াতের ডাকা দেশব্যাপী সকাল সন্ধ্যা হরতাল শুরু হয়েছে।

জামায়াতের রোববারের হরতালের সমর্থনে সকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, সায়েদাবাদ, ধোলাইখাল, হাজারীবাগ, রামপুরা বনশ্রী, মগবাজার রেলগেট, মহাখালী টিবিগেট ইত্যাদি এলাকায় জামায়াত-শিবির ঝটিকা মিছিল বের করে। সব জায়গাতেই পুলিশের উপস্থিতি টের পাওয়া মাত্রই মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা দ্রুত সটকে পড়ে।

সায়েদাবাদের দয়াগঞ্জ,  হাজারীবাগ ও মহাখালী টিবিগেট চলে গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা। রামপুরা বনশ্রী ও মগবাজার রেলগেটে জামায়াত-শিবির কর্মীরা ককটেলের বিস্ফোরন ঘটায়।

 পুলিশ  ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে ৪ জন আটক শিবির কর্মী আটক করেছে বলে জানা গেছে। শিবির কর্মীদের ধরতে ব্যাপক তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

 আরএম-১২/৫-৫


------------------------------------------------------------------------------------------------------

হরতালের শুরুতে মাঠে নেই জামায়াত-শিবির


প্রস্তুতি :  জাতীয় (প্রতিমুহূর্ত.কম) ---
মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায়ের প্রতিবাদে আজ রোববার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। তবে এদিন হরতালের শুরুতে আগের কর্মসূচির মতো ফজরের নামাজের পর পর মাঠে জামায়াত-শিবির তৎপর হয়নি।


জামায়াতে ইসলামীর ডাকা হরতালে ফজরের নামাজের পর পরই রাস্তায় কিছু সময়ের জন্য পিকেটিং করতে নেমে পড়েন দলের কর্মী সমর্থকরা। তবে আজ রোববারের হরতালে দিনের শুরুতে রাজধানীতে তাদের তেমন কোনো তৎপরতার খবর পাওয়া যায়নি। রাস্তায় প্রাইভেট গাড়ি বের না হলেও পাবলিক বাস চলাচল প্রায় স্বাভাবিক বলা যায়।

রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায় পুলিশ ও র্যাবের পাশাপাশি টহল দিচ্ছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। শনিবার সন্ধ্যা থেকে বিজিবি সদস্যরা রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান নেন। রাজধানীর কূটনৈতিক এলাকা, প্রগতি সরণী, সংসদ ভবন, ধানমণ্ডি, কাকরাইল, বনানী, গুলশান, বঙ্গভবন এলাকা, যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিজিবি সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে গত বৃহস্পতিবার কামারুজ্জামানের ফাঁসির আদেশ দেন আদালত। ওই দিন সন্ধ্যায় এক ই-মেইল বার্তায় দলের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান রোববার সারা দেশে হরতালে ডাক দেন। 
আরএম-১২/৫-৩

----------------------------------------------------------

ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’ ও ‘জামালা’


ঘূর্ণিঝড় মহাসেন ধেয়ে আসছে
 প্রস্তুতি : জাতীয় (প্রতিমুহূর্ত.কম) --

ভারত মহাসাগরের একটি বিরাট এলাকাজুড়ে আবহাওয়ার অস্থিতিশীলতার কারণে চলতি সপ্তাহে দুটি উষ্ণমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ের উৎপত্তি হয়েছে। সম্ভাব্য এই ঘূর্ণিঝড় দুটি বাংলাদেশ, ভারতের উত্তর-পূর্ব, শ্রীলঙ্কার পূর্ব ও মিয়ানমারের উপকূলে আঘাত হানতে পারে।

আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বঙ্গোপসাগরের গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’ এ রূপ নিয়েছে, যা মঙ্গলবার নাগাদ উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এতে লাখ লাখ মানুষের জীবন হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে। এছাড়া আগামী বুধবার বাংলাদেশ উপকূলের দিকে ধেয়ে আসবে ঘূর্ণিঝড়  ‘জামালা’। নতুন করে গঠিত এ উষ্ণমণ্ডলীয় ঝড় চলতি সপ্তাহে ভারত মহাসাগরের দক্ষিণে প্রবাহিত হবে এবং এই সময়ে পশ্চিম অভিমুখেও প্রবাহ থাকবে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ও উত্তর-পূর্ব ভারতে গত সপ্তাহে ৬ থেকে ১২ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত হয়। এ কারণে সম্ভাব্য উষ্ণম-লীয় ঘূর্ণিঝড়ে অতিরিক্ত ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ব্যাপক বন্যা ও ভূমিধসও ঘটতে পারে।
দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি সামান্য উত্তর-পশ্চিম দিকে সরে গিয়ে ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’-এ (যা আবহাওয়াবিদদের কাছে ০১বি নামে পরিচিত) পরিণত হয়েছে।

উপগ্রহ থেকে তোলা শুক্রবারের ছবিতে ভারতের দক্ষিণে উষ্ণমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়  ‘জামালা’র সঙ্গে সন্নিহিত মেঘ দেখা গেছে। এতে শ্রীলঙ্কার দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে নতুন করে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়েরও (০১বি) অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।

আবহাওয়া অধিপ্তরের আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান জানান, এসকাপ (ইএসসিএপি) প্যানেল এ ঘূর্ণিঝড়ের নাম দিয়েছে ‘মহাসেন’। এটি শ্রীলঙ্কান শব্দ।
আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-৩) বলা হয়, সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিম, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৬১০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিম এবং মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৭০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। 
সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম থেকে এক হাজার ৮০০ কিমি দক্ষিণ-পূর্বে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিমির মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিমি। দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া আকারে ৮৮ কিমি (প্রতিঘণ্টায়) বেগে বইছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুব উত্তাল রয়েছে।
বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্যের কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মংলা সমুদ্র বন্দরগুলো তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এর আগে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-২) বলা হয়, সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে এক হাজার ৮৬০ কিলোমিটার দক্ষিণে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৭৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৮৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।

আরএম-১২/৫-২

 

-----------------------------------------------------------------------------

 

দুইনেত্রীর সঙ্গে জাতিসংঘের সহকারি সেক্রেটারি জেনারেলের সাক্ষাৎ


প্রস্তুতি : জাতীয় (প্রতিমুহূর্ত.কম) --
 

সফররত  জাতিসংঘের সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো ১১ মে সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে এবং রাতে বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার গুলশানের কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। দুইনেত্রীর কাছে জাতিসংঘ মহাসচিবের শুভাচ্ছা পৌছে দিয়ে তিন বলেন, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে সব মহলের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখতে চায় জাতিসংঘ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোর বৈঠকের পর এক ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সকলের প্রতি তিনি আহবান জানান।
অবাধ, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে সংলাপের জন্য কোনো পূর্ব শর্ত থাকতে পারে না।
শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সহকারি সেক্রেটারি জেনারেলকে বলেন যে, এখানকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে জাতিসংঘ পর্যবেক্ষকদের বাংলাদেশ সবসসময়ই স্বাগত জানায়।প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভি, এ্ম্বাসেডর এ্যাট লার্জ এম জিয়াউদ্দিন এবং প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

  সন্ধ্যায় গুলশান কার্যালয়ে বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠকে সফররত জাতিসংঘের সহকারি মহাসচিব ওসকার ফার্নান্দেজ তারানকো বলেন, জাতিসংঘ বাংলাদেশে সবদলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়। জবাবে খালেদা জিয়া দলীয় সরকারের অধীনে তা সম্ভব নয় বলে তাকে অবহিত করেন। এসময় ওসকার ফার্নান্দেজ বলেন, আমরা আশাকরি রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার ভিত্তিতে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ বের করবে।

বৈঠকে আলোচিত বিষয় নিয়ে  সাংবাদিকদের বিফ্রিংকালে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী এসব কথা জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ নানা বিষয় জানতে জাতিসংঘের মহাসচিবের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক শাখার সহকারি মহাসচিব ঢাকায় এসেছেন। এর ধারাবাহিকতায় তিনি বিরোধী দলীয় নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বিরোধী দলীয় নেতার সঙ্গে বৈঠকের সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের ড. ওসমান ফারুক, রিয়াজ রহমান, সাবিহউদ্দিন আহমেদ ও বিরোধী দলীয় চীফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক ছাড়াও ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি নিল ওয়াকার উপস্থিত ছিলেন।

আরএম-১১/৫-৩

 

 

-----------------------------------------------------------------------------------------------------

নারী সমাবেশে ১০ দফা দাবি


প্রস্তুতি: নারী (প্রতিমুহূর্ত.কম)--

হেফাজতের ইসলামের ১৩দফা দাবির প্রতিবাদে আজ ১১ মে শনিবার রাজধানীর প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত হয় নারী সমাবেশ। এতে নারীনেত্রীরা হেফাজতের ইসলামের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে হুশিয়ারী উচ্চারন করে। ঘৃণ্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ‍যারা নারীর অধিকার খর্ব করছে সেসব ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়াসহ নারী অধিকার রক্ষায় ১০ দফা দাবি জানিয়েছেন নারী নেত্রীরা।

বেলা ৩টার দিকে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দুপুর থেকেই লোক আসতে শুরু করে সমাবেশস্থলে। প্রতিবাদী গান-আবৃত্তি ও স্লোগানের মধ্য শুরু হয়  প্রতিবাদী নারী গনসমাবেশ। বিভিন্ন নারী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মী,স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারন নারী-পুরুষ এ সমাবেশে যোগ দেন।
সমাবেশের মূল অনুষ্ঠান শুরু হয় জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে সোয়া ৩টায়। এতে সভাপতিত্ব করেন নারী নেত্রী আয়েশা খানম। সমাবেশে বক্ত্যব রাখেন অনন্যা সাহা, রেবেকা স্মরনী, লিপি বেগম এবং আরো অনেকে।

সমাবেশে সাভারের দূর্ঘটনায় নিহতদের জন্য শোক প্রস্তাব ঘোষনা করা হয় এবং এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এর পর  প্রতিবাদী নারী গন সমাবেশের ঘোষনাপত্র পাঠ করা হয়। ঘোষনায় বলা হয়, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থায় আমরা নারী সমাজ গভীর উদে¦গ ও উৎকন্ঠার সাথে বলছি যে মুষ্ঠিমেয় সাম্প্রদায়িক সংগঠন,দল ও ব্যক্তি রাজনৈতিক উ্দ্দেশ্য প্রনোদিত হয়ে নারীঅধিকার খর্ব করার ঘৃণ্য ষঢ়যন্ত্র  লিপ্ত এবং নারীর অধিকার ও অবস্থান সম্পর্কে অপপ্রচার চালাচ্ছে। যা বাংলাদেশের সংবিধান পরিপন্থি। তাদের এই অপচেষ্টা ও অপপ্রচারের বিরুদ্দে আমরা জোড় প্রতিবাদ,তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছি।

নারী নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, ৭২-এর সংবিধান, নারী অধিকার ও মানবিক মর্যাদা বিরোধী সব অপতৎপরতা বন্ধ, ঘৃণ্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ‍যারা নারীর অধিকার খর্ব করছে সেসব ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া, নারী পুরুষ জাতি ধর্ম নির্বিশেষে দেশের সকল নাগরিকের সমান অধিকার রক্ষায় সকল প্রকাশ সাম্প্রদায়িক অপচেষ্টা ও ধর্ম ভিত্তিক রাজিনৈতিক অপতৎপরতা বন্ধ, দেশের উন্নয়ন ও নারীর অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে এবং নারীর সাংবিধানিক অধিকার সুরক্ষার জন্য সব কুচক্রী মহলের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থান নেওয়া, অনতিবিলম্বে নারী উন্নয়ন নীতিসহ নারী অধিকার সমুন্নত রাখা এবং নারী পুরুষের সমতা সমুন্নত রাখার জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সব সনদ বাস্তবায়ন করার দাবি জানান।

তারা আরও দাবি জানান, দেশে ৭২-এর সংবিধান অনুযায়ী অসাম্প্রদায়িক চেতনার পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং আইন করে রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা, রানা প্লাজার হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া, আহত শ্রমিকদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন এবং আহত-নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা,  তাজরীন, স্প্রেকট্রামসহ সব ক্ষতিগ্রস্ত কারখানা ও প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের ক্ষাতিপূরণ ও পুনর্বাসনসহ অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা, পোশাক শিল্পের সঙ্গে জড়িত নারীদের নিরাপত্তার নিশ্চিকরণ এবং বেতন ভাতা শ্রম আইন অনুযায়ী প্রদান করার।

সভাপতির বক্তব্যে আয়েশা খানম বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ন ও উন্নয়নমূলক কাজে নারীরা পুরুষের পাশাপাশি সমান ধাপে এগিয়ে যাচ্ছে। তখন ৭১ এর স্বাধীনতা বিরোধী জামাত শিবির ও হেফাজতে ইসলামী ১৩ দফার নামে নারীদের ৫০ থেকে ১০০ বছর আগের মান্দাতার আমলে ফিরিয়ে নেয়ার ষড়যন্ত্র করছে। তিনি আরো বলেন এই ১৩দফা প্রেক্ষাপট গ্রহনযোগ্য নয়। আইন করে এই সব স্বাধীনতা বিরোধীদের রাজনীতি বন্ধ করার আহব্বান জানান। তিনি নারী সমাজকে একত্রিত হয়ে নারীদেরকে আরো উচ্চ শিখরে এগিয়ে নিয়ে যেতে সকলের সাহায্য কামনা করেন।

লেখা : শিপন চন্দ্র মণ্ডল
ছবি : নিপুণ কাওসার

এসসি-১১/৫-১-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------

ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়


প্রস্ততি : জাতীয় (প্রতিমুহূর্ত.কম)
দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। ‘মহাসেন’-নামের ঘূর্ণিঝড়টি মঙ্গলবার উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে আশংকা করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে মহাসেন। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মংলা সমুদ্র বন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সাগরে মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোতে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

আগামী মঙ্গলবার মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশ ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

এএ/১১/৫/১

 

 -----------------------------------------------------------------------------

 সাভার ট্র্যাজেডি : নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০৮৫


প্রস্তুতি : জাতীয় (প্রতিমুহূর্ত.কম)

উদ্ধার কাজের ১৭ দিনে এসে বিস্ময় জাগানিয়া রেশমা বেগমকে উদ্ধারের পর উদ্ধারকর্মীরা আরো জীবিত মানুষ সন্ধান পাবেন বলে আশা করছেন।  শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ধসে পড়া রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে আরও ৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছেন উদ্ধারকর্মীরা। ১৮তম দিনে উদ্ধার করা মরদেহের মোট সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮৫ জনে। যার মধ্যে ৭৮১ জনের মরদেহ শনাক্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এখন যেসব লাশ উদ্ধার করা হচ্ছে সেগুলোর অধিকাংশই বিকৃত, গলিত ও অর্ধগলিত। এগুলো শনাক্ত করে হস্তান্তর করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে বলে জানান উদ্ধারকর্মীরা।

এদিকে উদ্ধারকৃত মরদেহগুলোর মধ্যে ৬১টি মরদেহ সাভার অধরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে হস্তান্তরের অপেক্ষায় আছে । ৮৪টি লাশ রয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়েছে ১৫৬টি লাশ।

উল্লেখ্য, গত ২৪ এপ্রিল সাভার বাসস্ট্যান্ড বাজারে যুবলীগ নেতা সোহেল রানার মালিকানাধীন আটতলা বাণিজ্যিক ভবন রানা প্লাজা ধসে পড়ে। এতে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটে। এছাড়া আহত ও জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ২ হাজার ৪৩৯ জন শ্রমিককে।


  ------------------------------------------------------------------------------------

মতিঝিলে হেফাজতের সমাবেশ সম্পর্কে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের প্রেসনোট


 প্রস্তুতি : জাতীয় (প্রতিমুহূর্ত.কম)--


মতিঝিলে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশের দিন রাজধানীজুড়ে সহিংসতা ও যৌথ বাহিনীর অপারেশন সম্পর্কে প্রেসনোট দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়।
শুক্রবার বিকাল সোয়া ৫টার দিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অতিরিক্ত সচিব মাইন উদ্দিন খন্দকার স্বাক্ষরিত এ প্রেসনোট দেওয়া হয়।
প্রেসনোটটি নিচে দেওয়া হলো -
গত ৫ মে হেফাজতে ইসলাম কর্তৃক ঢাকা অবরোধ এবং তৎপরবর্তী শাপলা চত্বরে অনুষ্ঠিত সমাবেশকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বিভিন্ন মহল কর্তৃক কতিপয় মিডিয়ায় প্রচারিত/প্রকাশিত কথিত গণহত্যা/লাশ গুম ইত্যাদি ধরনের গুজবকে কেন্দ্র করে জনমনে বিরাজমান বিভ্রান্তি নিরসনের জন্য প্রকৃত সত্য উন্মোচনকল্পে সরকার সংশ্লিষ্ট প্রকৃত তথ্যাদি প্রকাশ করা প্রয়োজন বলে মনে করছে। 
হেফাজতে ইসলাম নামে একটি অনিবন্ধিত সংগঠন গত ৬ই এপ্রিল ঢাকার শাপলা চত্বরে সমাবেশ করে ৫ই মে ঢাকা অবরোধের কর্মসূচী ঘোষণা করে। পূর্ব ঘোষিত এ কর্মসূচী অনুসারে তারা ঢাকার চারদিকে ছয়টি স্থানে অবরোধের আয়োজন করে। 
অবরোধ কর্মসূচী পালনের একদিন পূর্বে ৪ মে শনিবার তারা পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচী সংক্ষিপ্ত করণের কথা বলে ৫ মে বেলা ২টা থেকে শাপলা চত্বরে তাদের নেতা হাটহাজারী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আহমদ শফির নেতৃত্বে দোয়া কর্মসূচী পালনের অনুমতি চায়। পূর্ব ঘোষিত এ কর্মসূচীতে ঢাকা শহরের ভেতরে কোন সভা-সমাবেশ করার কার্যক্রম না থাকলেও সরকার গণতান্ত্রিক উদারতার পরিচয় দিয়ে হেফাজতে ইসলামকে শর্তাধীনে সন্ধ্যার পূর্ব পর্যন্ত দোয়া কর্মসূচী প্রতিপালনের অনুমতি প্রদান করে।
কিন্তু ৫ই মে অবরোধ কর্মসূচীর প্রথম থেকেই হেফজতে ইসলাম ঢাকার চারপাশে ৬টি পয়েন্টে অবরোধ স্থাপন করে শহরে ঢুকে এবং শাপলা চত্বরে অবস্থান নিতে থাকে। সেই সাথে বায়তুল মোকাররম এলাকায় জমায়েত হয়ে কর্তব্যরত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এবং উচ্ছৃঙ্খল কর্মীরা নাশকতামূলক কর্মকান্ড চালাতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা ব্যাপক জমায়েত করে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ভাংচুরে লিপ্ত হয়। তারা নির্বিচারে গাড়ী পোড়াতে থাকে, পুরানা পল্টন সড়কে অবস্থিত কমিউনিষ্ট পার্টির অফিসে অগ্নিসংযোগ করে। অত:পর পাশেই মুক্তি ভবনে লুটপাট চালিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। হকারদের দোকানসমূহ লুটপাট করে, বইয়ের দোকানসমূহ তছনছ করে এবং পবিত্র কোরআন শরীফের স্টল বিভিন্ন দিক থেকে পেটো্রল দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। উন্মত্ত হেফাজত কর্মীরা ফুটপাতে স্থাপিত জায়নামাজ, তসবি ও টুপির দোকান এবং অন্যান্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী দোকান পুড়িয়ে দিয়ে শত শত নিরীহ কর্মজীবী মানুষকে সর্বশান্ত করে।
হেফাজতের লোকজন হাউস বিল্ডিং ফাইনান্স করপোরেশন কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে এবং তাদের ১১ টি মূল্যবান গাড়ীতে অগ্নিসংযোগ করে । এ সময়ে দমকল বাহিনীর লোকজন আগুন নিভাতে গেলে তাদেরকে মারধর ও আহত করে তাড়িয়ে দেয়। দুপুরের পর অবরোধ স্থলসমূহে আন্দোলনরত লোকজন শাপলা চত্বর ও বায়তুল মোকাররম এলাকায় হাজির হলে হেফাজতি কর্মীরা উন্মত্ত হয়ে ডিসি (ট্রাফিক) পূর্ব জোন অফিসে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে অগ্নিসংযোগ করে। এতে ডিসি মতিঝিলসহ একজন পুলিশ আগুনে পুড়ে আহত হয়।
দুপুরের দিকে একপর্যায়ে তারা গুলিস্তানে অবস্থিত আওয়ামীলীগ অফিসে হামলা চালাতে উদ্যত হয় এবং গোলাপ শাহ মাজারে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। তারা জনতা ব্যাংকের করপোরেট শাখায় হামলা চালায় এবং লুটপাটের চেষ্টা করে এবং নিচতলায় অবস্থিত এটিএম বুথ ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়। তাছাড়া ইষ্টার্ন ব্যাংক ও ব্যাংক এশিয়ায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। উচ্ছৃঙ্খল কর্মীরা মতিঝিলে সরকারী কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের বাস ডিপোতে ঢুকে সরকারী কর্মচারী পরিবহনের কয়েক ডজন বাস পুড়িয়ে ধ্বংস করে দেয়। তাদের তান্ডব থেকে রক্ষা পায়নি আন্তর্জাতিক মানে সজ্জিত স্টেডিয়াম, রাস্তায় লাগানো বৃক্ষরাজি, রাস্তা বিভাজক, লাইট পোষ্ট ও বিভাজকে স্থাপিত ষ্টীল স্ট্রাকচার। এমনকি সৌর বিদ্যুৎ পোষ্টও ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়।
রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক ও প্রশাসনিক কেন্দ্রে যখন নজীরবিহীন লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চলছে তখন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে গণমাধ্যমে হেফাজতে ইসলামকে সত্বর নৈরাজ্য বন্ধ করে সন্ধ্যার পূর্বেই তাদের প্রতিশ্রুতি মত শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় সরে যাবার জন্য আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু হেফাজতের নেতৃবৃন্দ তাতে কর্ণপাত করেনি, বরং তাদের বেআইনী অবস্থান কার্যক্রম বেপরোয়াভাবে চালিয়ে যেতে থাকে। শেষ বিকেলে তাদের নেতা আহমদ শফি তাঁর অবস্থানস্থল লালবাগ মাদ্রাসা থেকে শাপলা চত্বরের সমাবেশ স্থলে রওয়ানা হন। কিন্তু কিছুদূর এসেই তিনি বি,এন,পির নেতৃপর্যায় থেকে ফোন পেয়ে শাপলা চত্বরে না এসে ফিরে যান। এদিকে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির ব্যাপকতাও বাড়তে থাকে। রাত এগিয়ে এলে বি,এন,পি নীতিনির্ধারকদের নিয়ে জরুরী বৈঠক করে। বৈঠক শেষে মাননীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তাদের নেতা কর্মীদেরকে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচীতে সক্রিয় অংশ গ্রহণের আনুষ্ঠানিক নির্দেশ দেন এবং ঢাকা নগরবাসীকে হেফাজত কর্মীদের সহায়তা প্রদানের জন্য আহ্বান জানান। অবশ্য ঘটনার সূচনা থেকেই বি,এন,পি ও জামায়াত শিবির কর্মীরা নৈরাজ্যকর কার্যক্রমের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলো বলে জানা যায়। 
হেফাজত কর্মীরা ডিভাইডারের মাঝে থাকা গাছ গুলো কেটে রাস্তায় বেরিকেড দেয়, ডিভাইডার ভেঙ্গে দেয় এবং নির্বিচারে গাড়ীতে অগ্নিসংযোগ করতে থাকে। লোহার ডিভাইডার ও কাঁটাতার উপড়ে ফেলে দেয়। রাস্তায় বড় বড় অগ্নিকান্ড ঘটিয়ে গণ আতঙ্কের সৃষ্টি করে। রাত বাড়ার সাথে সাথে কতিপয় গণমাধ্যমে তাদের এহেন বিভীষিকাময় কর্মকান্ড ও উষ্কানীমূলক বক্তব্য প্রচার করতে থাকলে নগরবাসী আতঙ্কিত হন। ফলে দেশবাসী চরম উদ্বিগ্ন অবস্থায় সময় কাটাতে থাকেন।
দেশ যখন মহা দুর্যোগের দ্বারপ্রান্তে, তখন জনগণের নির্বাচিত সরকার দেশ ও জনগণের নিরাপত্তা ও সম্ভাব্য অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ও নৈরাজ্য থেকে দেশকে রক্ষার নিমিত্তে এবং নগরবাসীর জানমাল রক্ষার্থে উচ্ছৃঙ্খল ও উন্মত্ত ধ্বংসযজ্ঞে লিপ্ত হেফাজত কর্মীদের নিরাপদে সরিয়ে দেবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। নৈরাজ্য প্রতিরোধ, গণতন্ত্র রক্ষা, আইনের শাসন সুরক্ষা, গণনিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্যই এই অভিযান অপরিহার্য্য হয়ে উঠে। অনন্যোপায় হয়ে রাত প্রায় ২টায় ঢাকা মহানগর পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি-র যৌথ অভিযান শুরু হয়। অভিযানে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এতে জল কামান, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ব্যবহার করা হয়। 
অভিযানের শুরুতেই মাইকে একাধিকবার সতর্ক  করে সকলকে চলে যাবার জন্য আহ্বান জানানো হয়। আরামবাগ ও দৈনিক বাংলা মোড় থেকে শাপলা চত্বরমুখী সড়ক দিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী আস্তে আস্তে এগুতে থাকে এবং ইত্তেফাক মোড় অভিমুখী রাস্তা খোলা রেখে জনতাকে নিরাপদে সরে যাবার সুযোগ করে দেয়। অভিযান শুরুর  ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে অবস্থানরত জনতা শাপলা চত্বর ছেড়ে সায়দাবাদ-যাত্রাবাড়ীর পথে সরে যায়। অভিযানকালে মঞ্চের পাশে কাফনের কাপড়ে মোড়ানো ০৪টি মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। পুলিশ সূত্রে জানা যায় সারাদিন বিভিন্ন পর্যায়ের সংঘাতে ০৩ জন পথচারী একজন পুলিশ সদস্যসহ মোট ১১ জন নিহত হন।
এ ঘটনায় হাজার হাজার লোক প্রাণ হারিয়েছে বলে অবাস্তব ও ভিত্তিহীন গুজবের পরিপ্রেক্ষিতে জনসাধারণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, উক্ত গুজবসমূহ সম্পূর্ণ অসত্য, মনগড়া ও অসৎউদ্দেশ্য প্রণোদিত। কেননা:
(ক) অবাধ তথ্য প্রবাহ ও ব্যাপক তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে হাজার হাজার লোক হত্যা করে লাশ গুম করা কোনভাবেই সম্ভব নয়। মোবাইল ফোন, ই-মেইল, ইন্টারনেটের এই যুগে এটি নিতান্তই অবিশ্বাস্য।
(খ) এত প্রাণ হানি হয়ে থাকলে নিশ্চয়ই নিহতদের পরিবার পরিজন, আত্মীয়স্বজন, বন্ধু বান্ধব প্রিয়জনদের সন্ধানে তৎপরতা চালাতেন এবং গণমাধ্যমে তা প্রকাশ পেত। কিন্তু এ ক্ষেত্রে একটি উদাহরণও কোন মহল থেকে হাজির করা হয়নি। এতেই প্রমাণ হয় ব্যাপক লোক হননের বিষয়টি অসত্য ও পুরোপুরি উদ্দেশ্য প্রণোদিত গুজব।
(গ) অভিযান কার্যক্রম পরিচালনার সময় টিভি ও ষ্টিল ক্যামেরাসহ বিপুল সংখ্যক সংবাদকর্মী উপস্থিত ছিলেন, যারা ঘটনা পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যবেক্ষণ ও সম্প্রচার করেছেন। উঁচু ভবন থেকে বহুলোকজন ঘটনাক্রম অবলোকন করেছেন ও ছবি ধারণ করেছেন। কিন্তু কোথাও মারাত্মক আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের চিত্র পাওয়া যায়নি, দৃশ্য দেখা যায়নি। কাজেই বিপুল প্রাণহানির গুজব ছড়ানোর বিষয়টি অশুভ মহলের অসৎ উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচার। বরং বাস্তবতা হলো সুশৃঙ্খল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সুচিন্তিত পরিকল্পনা অনুযায়ী অপরিসীম ধৈর্য ও কঠোর সংযমের সাথে পুরো অভিযান পরিচালনা করেছে। অভিযান চলাকালে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন গলিতে ও ভবনের ফাঁকে যারা আশ্রয় নিয়েছিলো তাদেরকে অভয় দিয়ে যত্নের সাথে উদ্ধার করে নিরাপদে সরে যাবার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। এদের মধ্যে প্রচুর কিশোর ও তরুণ ছিলো যারা প্রথমবার ঢাকা মহানগরীতে এসেছে, তাদেরকে তাদের গন্তব্যস্থল সম্পর্কে পথ নির্দেশ দিয়ে চলে যেতে সহায়তা করেছে যা টিভি সমপ্রচারে দেখা গেছে। পুরো অভিযান পরিচালনাকালে কারোর প্রতি কোন নিষ্ঠুর ও অমানবিক আচরণ করেছে মর্মে কোথাও কোন সংবাদ বা ছবিও দেখা যায়নি।
(ঘ)  পুলিশ ও বিজিবির তরফ থেকে সংবাদ মাধ্যমে ‘অসংখ্য জনগণের মৃত্যু সম্বলিত অপপ্রচার’ অসত্য, যুক্তি বিহীন এবং উদ্দেশ্যমূলক বলে চিহ্নিত করা হয়।
শাপলা চত্বর থেকে হেফাজতে ইসলামের লোকজনকে সরিয়ে দিলে তারা ঢাকা চট্টগ্রাম সড়কে আবারও জমায়েত হতে থাকে। পরদিন ০৬ই মে ভোর থেকেই তারা রাস্তায় ব্যারিকেড বসায়। সেই সাথে নির্বিচারে রাস্তার পাশে রাখা গাড়ীতে অগ্নিসংযোগ করতে থাকে। এরই মধ্যে পূর্ব নির্দেশ মত বি,এন,পি জামায়াত কর্মীরাও ধ্বংসযজ্ঞে যোগ দেয়। নারায়ণগঞ্জ জেলার কাঁচপুর, সাইনবোর্ড, শিমরাইল, সানার পাড়, কোয়েত মার্কেট ও মাদানী নগর এলাকায় উন্মত্ত ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ভয়াবহরূপ ধারণ করে। তারা মাদানী নগর মাদ্রাসাকে কেন্দ্র করে আশ-পাশের মসজিদের মাইক ব্যবহার করে চরম উত্তেজনাকর গুজব ছড়িয়ে লোক জড় করে কর্তব্যরত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপর ঝাপিয়ে পড়ে। তাদের পরিকল্পিত সংঘবদ্ধ আক্রমণ প্রতিরোধ করতে গিয়ে ২ জন পুলিশ, যথাক্রমে নায়েক ফিরোজ ও কনষ্টেবল জাকারিয়া এবং ২ জন বি,জি,বি সদস্য যথাক্রমে শাহআলম ও লাভলু গুরুতর আহত হয়ে লুটিয়ে পড়ে এবং হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করে। সেই সাথে বিভিন্ন পর্যায়ে উন্মত্ত সহিংসতার ফলশ্রুতিতে ১৩ জন মৃত্যুবরণ করেছে মর্মে জানা যায়। ঘটনা আরও চরম আকার ধারণ করতে থাকলে অধিক সংখ্যক ফোর্স সমাবেশ ঘটিয়ে আন্দোলন কারীদেরকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

 -----------------------------------------------------------------------------------

হাসপাতালে কেমন আছেন রেশমা ? 



প্রস্তুতি : জাতীয় (প্রতিমুহূর্ত.কম)--

সাভারের ধসে পড়া রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে  ১৭ দিনের মাথায় অবিশ্বাস্য ও অলৌকিকভাবে বেঁচে থাকা রেশমাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এ মুহূর্তে সাভার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তার চিকিৎসা চলছে। 

হাসপাতালে আানার পরপরই তাকে স্যালাইন দেওয়া হয়। শুধু পানি খেয়ে ১৭ দিন বেঁচে থাকা রেশমাকে তরল খাবার খেতে দেওয়া হচ্ছে । তার চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড করা হয়েছে। সিএমএইচে রেশমার সাথে তার মা ও বোন আসমা রয়েছেন।

সংবাদ মাধ্যমের কাছে রেশমা বলেন, আমি একটু একটু করে পানি খেয়ে বেঁচে ছিলাম। নিঃশ্বাস নিতে পারছিলাম।এদিক সেদিক ফেলে দেওয়া কিছু খাবার ছিল, তাই খেতাম। মাঝেমাঝে বিভিন্ন ফুটো থেকে ফোঁটায় ফোঁটায় পানি পড়ত। এসব খেয়েই বেঁচে ছিলাম। শেষের দুই দিন কিছুই খাওয়া হয়নি। খাবার শেষ হয়ে গিয়েছিল।
ভবন ধসের ৪০৮ ঘণ্টা পর ধসে যাওয়া রানা প্লাজা থেকে উদ্ধার রেশমা আরো বলেন, উদ্ধারকর্মীরা যখন উদ্ধার কাজ চালাচ্ছিলেন, তখন আমি বড় বড় যন্ত্রের শব্দ শুনতে পেতাম। শব্দ শুনে আমি বিশ্বাস করি, আল্লাহ হয়তো আমাকে এখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যাবেন।
শারীরিকভাবে অসম্ভব দুর্বল হয়ে পড়ার কারণে চিকিৎসকরা রেশমাকে বেশি কথা বলতে নিষেধ করেছেন। তাকে পুরোপুরি বিশ্রাম ও ঘুমানোর পরামর্শ দিয়েছেন। হাতেপায়ে আঘাত পাওয়ায় তাকে বেদনানাশক ওষুধ ও ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশনের অধিনায়ক মেজর জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী সংবাদ সম্মেলনে জানান, সাভারের ভবন ধসের সময় রেশমা রানা প্লাজার তৃতীয় তলার পোশাক কারখানায় কর্মরত ছিলেন। ধসের সময় তার সঙ্গে আরো তিন পোশাক শ্রমিক ছিলেন, যাদেরকে পরে মৃত উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেল ৪টা ২৫ মিনিটে সেনাবাহিনী ও দমকলের একটি চৌকস দল তাকে উদ্ধার করে। উদ্ধারের পর সেনাবাহিনীর একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সাভার সিএমএইচ এ নিয়ে যাওয়া হয়। 
উদ্ধারকর্মী রাজ্জাক বাংলাদেশের খবরকে জানান, একটি প্লাস্টিকের পাইপ নাড়িয়ে নিজের অবস্থান জানান দেন রেশমা। শুকনো খাবার খেয়ে তিনি বেঁচে থাকলেও গত ২ দিনে কোন খাবার পাননি তিনি। সন্ধান পাওয়ার পর রেশমাকে পানি ও বিস্কুট খেতে দেওয়া হয়। তবে বিপদের আশংকায় তাকে অক্সিজেন দেওয়া হয়নি।
এর আগে শুক্রবার বেলা পৌনে ৩ টার দিকে তার সন্ধান পায় উদ্ধারকর্মীরা। তিনি অক্ষত অবস্থায় ধসে পড়া ভবনের মসজিদের ভেতরে আটকে ছিলেন।
রেশমার গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে তুলসিবাড়ি গ্রামে। তারা তিন বোন, দুই ভাই। সবার ছোট রেশমা। সাত মাস আগে স্বামী রাজ্জাক তাকে ছেড়ে চলে যান।

রানা প্লাজার তৃতীয় তলায় নিউ ওয়েভ বটমস নামের কারখানায় সুইং অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন রেশমা। এখানে তিনি দেড় বছর ধরে কাজ করে আসছেন।
উল্লেখ্য, গত ২৪ এপ্রিল সকাল পৌনে নয়টার দিকে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ৮তলা রানা প্লাজা ধসে পড়ে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত এক হাজার ৪৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
 আরএম-১০/৫-১

 ---------------------------------------------------------------------------------

 

১৭ দিন পর উদ্ধার করা হলো জীবিত রেশমাকে


প্রস্তুতি : জাতীয় (প্রতিমুহূর্ত.কম)--

অবিশ্বাস্য ও অলৌকিকভাবে সাভারের ধ্বংসস্তুপ থেকে ১৭ দিন পর জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হলো রেশমাকে।

কর্ণেল মঈনের নেতৃত্বে উদ্ধারকর্মীরা ১০ মে শুক্রবার বিকেল ৪টা ২৭ মিনিটে রেশমাকে উদ্ধার করে।

এর আগে বেলা সোয়া তিনটায় ধসে যাওয়া রানা প্লাজার বেসমেন্টে রেশমার সন্ধান পাওয়া যায়। তিনি নিজেই এক খন্ড পাইপের মাধ্যমে উদ্ধারকর্মীদের নিজের অবস্থানের কথা জানান। প্রায় সোয়া একঘন্টা প্রচেষ্টার পর তাকে উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধারের পর পরই তাকে এম্বুলেন্সে করে চিকিৎসার জন্য সাভার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

শুক্রবার সাড়ে তিনটার দিকে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনের অংশে রেশমার সন্ধান পাওয়া যায়। বেসমেন্টের নামাজ পড়ার স্থানে রেশমা আটকে ছিলেন। পুরো ভবনটি ধসে পড়লেও সেই স্থানে তিনি অক্ষত ছিলেন।

রেশমার সন্ধান পাওয়া উদ্ধারকারী স্বেচ্ছাসেবক রফিক  বলেন, “আমি ওই স্থানটি দিয়ে যাতায়াত করছিলাম। এসময় একটি পাইপ নড়ে ওঠে। আমি পাইপটির কাছে যাই, এরপর গোঙানির আওয়াজ শুনি। একটি ফুটো দিয়ে কান পাতলে ভেতর থেকে এক নারী কণ্ঠ বলে ওঠে, আমাকে বাঁচান, আমাকে বাঁচান।" 

কাটার মেশিন দিয়ে সুড়ঙ্গ তৈরি করে রেশমাকে বের করা হয়। এ মুহূর্তে আরো জীবিত প্রাণ আছে কিনা তা সন্ধান করে দেখছে উদ্ধারকর্মীর।

গত ২৪ এপ্রিল সকাল পৌনে ৯টার দিকে রানা প্লাজা ধসে পড়ে। এতে এ পর্যন্ত এক হাজার ৪৫ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

 

 

 

যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায়, ঘুচলো আরেকটা কলংক

যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায়, ঘুচলো আরেকটা কলংক


প্রস্তুতি: জাতীয় (প্রতিমুহূর্ত.কম)

অবশেষে বৃহত্তর ময়মনসিংহের আলবদর বাহিনীর প্রধান কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

সকাল ১১ টা ২০ মিনিটে শুরু হওয়া কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের ৬২ পৃষ্ঠার সারসংক্ষেপ শোনার পর, গণহত্যাও নির্যাতনসহ ৭টি অভিযোগের মধ্যে ৩ ও ৪ নং অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দুপুর ২টায় এ রায় দেন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক। ৫ ও ৬ নং অভিযোগ পর্যাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণের অভাবের কারণে প্রমাণিত হয়নি।

মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতের এই প্রভাবশালী নেতার বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতন, দেশত্যাগে বাধ্যকরাসহ ৭ ধরনের অপরাধের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছিল।

১ নম্বর অভিযোগ-প্রসিকিউশনের অভিযোগে বলা হয়েছে, কামারুজ্জামানের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের সময় ২৯ জুন শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী থানার কালীনগর গ্রামে ফজলুল হকের ছেলে বদিউজ্জামানকে রামনগর গ্রামের আহম্মদ মেম্বারের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় আলবদর বাহিনীর সদস্যরা।

এরপর তাকে নির্যাতন করে আহম্মদনগরের রাস্তার ওপরে গুলি করে হত্যা করা হয়। পরে লাশ টেনে নিয়ে কাছাকাছি কাঠের পুলের নিচে পানিতে ফেলে দেওয়া হয়।

২ নম্বর অভিযোগ- মে মাসের মাঝামাঝি এক দুপুরে শেরপুর কলেজের তৎকালীন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রভাষক সৈয়দ আব্দুল হান্নানকে খালি গায়ে মাথা ন্যাড়া করে, গায়ে ও মুখে চুনকালি মাখিয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে নগ্ন অবস্থায় চাবুক দিয়ে পেটাতে পেটাতে শেরপুর শহর ঘোরায় আসামি কামারুজ্জামান ও তার সহযোগীরা।

৩ নম্বর অভিযোগ-একাত্তরের ২৫ জুলাই ভোর বেলায় কামারুজ্জামানের পরিকল্পনা ও পরামর্শে রাজাকার, আলবদরসহ পাকিস্তানী সেনাবাহিনী শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ি উপজেলার সোহাগপুর গ্রাম ঘিরে ফেলে। এরপর তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ১২০ জন পুরুষকে ধরে এনে হত্যা করে। ধর্ষণের শিকার হন গ্রামের মহিলারা।

৪ নম্বর অভিযোগ- ১৯৭১ সালের ২৩ অগাস্ট মাগরিবের নামাজের সময় গোলাম মোস্তফা তালুকদারকে ধরে নিয়ে যায় আলবদর বাহিনীর সদস্যরা। কামারুজ্জামানের নির্দেশে তাকে সুরেন্দ্র মোহন সাহার বাড়িতে বসানো আলবদর ক্যাম্পে রাখা হয়।

মোস্তফার চাচা তোফায়েল ইসলাম এরপর কামারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করে তার ভাতিজাকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু ওই রাতে আলবদর বাহিনীর সদস্যরা গোলাম মোস্তফা ও আবুল কাশেম নামের আরেক ব্যক্তিকে মৃগি নদীর ওপর শেরি সেতুতে নিয়ে গিয়ে গুলি করে।

গুলিতে গোলাম মোস্তফা নিহত হলেও হাতের আঙ্গুলে গুলি লাগায় নদীতে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণে বেঁচে যান আবুল কাশেম।


৫ নম্বর অভিযোগ-একাত্তরে রমজান মাসের মাঝামাঝি সময়ে এক সন্ধ্যায় শেরপুরের চকবাজারের বাসা থেকে মো. লিয়াকত আলী ও আরো ১১ জনকে আটক করে ঝিনাইগাতী আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে যায় আলবদর বাহিনীর সদস্যরা। এরপর তিনজন ছাড়া বাকি সবাইকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

গুলি করার সময় আসামি কামারুজ্জামান ও তার সহযোগী কামরান সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে অভিযোগ করেছে প্রসিকিউশন।

৬ নম্বর নির্যাতন- একাত্তরের নভেম্বর মাসে দিদারসহ কয়েকজনকে ময়মনসিংহ শহরের জেলা পরিষদ ডাকবাংলোয় ধরে নিয়ে যায় আলবদর বাহিনী। পাকিস্তানের পক্ষে বক্তব্য দিতে বাধ্য করতে সেখানে নির্যাতন চলে তাদের ওপর।


৭ নম্বর অভিযোগ-একাত্তরে ২৭ রোজার দিন দুপুরে টেপা মিয়ার বাড়ি ঘেড়াও করে আলবদর বাহিনী। এরপর কামারুজ্জামানের নির্দেশে টেপা মিয়াসহ ৫ জনকে হত্যা করা হয়।

আনুষ্ঠানিক অভিযোগের বিবরণ অনুযায়ী, কামারুজ্জামান এসব অপরাধ করেছেন একাত্তরের ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে। তার বিচরণক্ষেত্র ছিল বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা।

বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টার পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর এজলাসকক্ষে ২১৫ পৃষ্ঠার রায়ের সংক্ষিপ্তসার (৬২ পৃষ্ঠা) পাঠ শুরু হয়। সকাল ১১টা ৫ মিনিটে কামারুজ্জামানকে এজলাসকক্ষে তোলা হয়। এরপরই এজলাসে বসেন তিনজন বিচারক। চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে বিচারপতি মুজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারক প্যানেলের সদস্য শাহিনুর ইসলামের আদালতে এ বিচারকাজ শেষ হয়েছে গত ১৬ এপ্রিল।

বিচারক শাহিনুর ইসলাম রায়ের প্রথম অংশ পড়ে শেষ করেন। তার পর দ্বিতীয় অংশ পড়েন বিচারপতি মুজিবুর রহমান মিয়া। দুপুর সোয়া ১টার দিকে তৃতীয় অংশ পড়া শুরু করেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। রায়ের মোট ৬৫১টি অনুচ্ছেদ।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনাল-২-এ নেওয়া হয়। এদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাকে বহনকারী মাইক্রোবাসটি ট্রাইব্যুনালে পৌঁছে। আগের দিন সন্ধ্যার দিকে মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের সশস্ত্র বিরোধীতাকারী, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত জামায়াতের এই নেতাকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়।


আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনলের ৪র্থ রায় হিসেবে বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বরণীয় হয়ে থাকবে এই রায়।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সালাহ্উদ্দিন লাভলুর ধারাবাহিক নাটক 'কবুলীয়তনামা'

পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট ২টি গল্প

নাচো নাচো (রিমিক্স)