সবচেয়ে বিষাক্ত মাছ পাফার-ফিশ !




প্রস্তুতি : খেয়ালখুশি (প্রতিমুহূর্ত.কম)

পৃথিবীতে কত ধরনের মাছই না রয়েছে। তোমাদের কেউ কেউ মনে করতে পারে মাছ মানেই সুস্বাদু এবং শরীর স্বাস্থ্যের জন্য ভালো বা উপকারী।

আসলে সব ধরনের মাছই যে উপকারী হবে তা ভাবা যায় না মোটেই। তোমরা কি পাফার-ফিশ দেখেছ বা এর নাম শুনেছ? মাছ কিন্তু সমুদ্রে চলাচল করে। অর্থাৎ এদের নিবাস সমুদ্রের তলদেশে। বিচরণও করে এখানে। চলাফেরা করে সমুদ্রপৃষ্ঠে উপরিতল থেকে পাঁচ থেকে ৩৫ ফুট গভীরে।

পাফার-ফিশের দেহের গড় দৈর্ঘ্য প্রায় ১৮ ইঞ্চি। এদের বেশি দেখা যায় ফ্লোরিডা, বাহামা, ব্রাজিলের দক্ষিণাংশসহ বিশ্বের প্রায় সব সাগরেই। সুন্দর বাদামি রেখা দেখতে পাওয়া যায় এদের চোখের উপরে নিচে
 
এবার জানো মাছ খাওয়া নিরাপদ কিনা-

পাফার ফিশ খাওয়া মানুষের জন্য মোটেই নিরাপদ নয়। কারণ এটি এক ধরনের বিষাক্ত মাছ। বলা যেতে পারে মেরুদন্ড প্রাণীর মধ্যে সবচেয়ে বিষাক্ত মাছের তালিকায় নাম উঠেছে পাফার-ফিশের। এরা এত বেশি বিষাক্ত যে, অন্য প্রাণী খাওয়ামাত্র মারা যাবে। এমনকি অনেক প্রজাতির পাফার ফিশের ত্বকও মারাত্মক বিষাক্ত।

তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, মাছ এমন বিষাক্ত জেনেও তা আবার অনেক সময় মজা করে খেয়ে থাকে জাপান, চীন, কোরিয়া প্রভৃতি দেশের মানুষ। ধারণা করা হয়, মাছের শরীরের যে অংশে বেশি বিষাক্ত পদার্থ আছে তা কেটে ফেলে দিয়ে ওই স্থান ভালো করে ধুয়ে রান্না করা হয়।  

মৎস্য বিজ্ঞানীরা বলেন, সতর্কতার সাথে মাছ রান্না করে না খেলে তা হতে পারে আত্মহত্যার মতো
পাফার-ফিশের প্রধান খাবার সামুদ্রিক আর্চিন, শামুক, কাঁকড়া ইত্যাদি জলজ প্রাণী। এদের শরীরের কাঁটাগুলো দেখতে খুব ভয়ঙ্কর। আর শরীর জুড়েই রয়েছে অসংখ্য কাঁটা। কারণে অনেকে মাছকে কাঁটা মাছও বলে থাকে। শরীর ফুলালেই সেই কাঁটাগুলো হয়ে যায় ভয়ঙ্কর। তা হয়ে যায় অনেকটা সজারুর কাঁটার মতো শক্ত।

মাছের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, এরা শরীরের ভেতরে প্রচুর পানি ঢোকাতে পারে। প্রচুর পানি ধরে রাখার মতো ফাঁকা জায়গাও আছে শরীরের ভেতর। আর শরীরে যখন এরা প্রচুর পানি ঢোকায় তখনই ধরনের ফিশকে বলা হয়ে থাকে পাফার-ফিশ। যখন এরা ফুলে বেলুনের মতো রূপ ধারণ করে তখন এদেরকে মাছ বলেই মনে হবে না। ফুলে বেলুনের মতো হয়ে যায় বলে অনেক দেশের শিশুরা মাছকে বলে থাকে বেলুন মাছ। 

ধারণা করা হয়, অনেক সময় আত্মরক্ষার জন্য এরা কাঁটাগুলো কাজে লাগায়। অনেক ধরনের জলজ প্রাণী ভয়ে এদের পাশ দিয়েও যেতে চায় না। ফলে এরা নিশ্চিন্তে চলাফেরা করে। পাফার-ফিশ নকটারনাল বা নেশাচর প্রাণী। দিনের বেলায় ঘাপটি মেরে বসে থাকে নানা ফাঁকফোকরে।

অঞ্চলভেদে মাছের নাম হয়ে থাকে বিভিন্ন ধরনের। অনেক দেশে মাছকে বলে টেপা ফিশ। জাপানিরা পাফার মাছকে ডাকে ফুগু। জাপানি বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ফুগুর ত্বক শরীরে থাকে প্রচন্ড বিষাক্ত টিউরোটক্সিন নামক উপাদান, যা সায়ানাইডের তুলনায় ১২০০ গুণেরও বেশি কার্যকর বিষ। এর বিষ কোনোভাবে মানুষের পেটে গেলে সাথে সাথে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যায় শরীর। আর অল্পক্ষণের মধ্যেই মানুষ মারা যায় এ্যাফাইজিয়াথন রোগে। এর কোনো চিকিৎসাও এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি

আমাদের দেশের পটকা মাছ পাফার-ফিশরই একটি শ্রেণী।

সূত্র: ইন্টারনেট
রিপোর্ট: আব্দুল্লাহ আল জুবায়ের, নিউজরুম এডিটর
এজে- ১৮/৫-২

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সালাহ্উদ্দিন লাভলুর ধারাবাহিক নাটক 'কবুলীয়তনামা'

পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট ২টি গল্প

নাচো নাচো (রিমিক্স)