ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলীয় অঞ্চলে ত্রান পৌঁছেনি

প্রস্তুতি : সারাদেশ (প্রতিমুহূর্ত.কম) ---

দেশের উপকূলীয় অনেক অঞ্চলই ঘূর্ণিঝড় মহাসেনের আঘাতে বিধ্বস্ত । ঝড়ের তাণ্ডবে নিহত হয়েছে ২০ জন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েক হাজার ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, বিদ্যুতের খুঁটি ও আবাদি ফসল। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্তরা খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। তাদের কাছে পৌঁছায়নি পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী। 

কক্সবাজারে মহাসেনের আঘাতে তিন শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলার মহেশখালী উপজেলার দলঘাটা ইউনিয়ন, মহেশখালীর সোনাদিয়া, ঘটি ভাঙ্গা, কুতুবদিয়ার তবলারচর, উত্তর ধুরুং, দক্ষিণ ধুরুং, টেকনাফের শাহা ফরিরদ্বীপ, সেন্টমার্টিন ও মিলার কিছু অংশে মহাসেনের প্রভাবে ৫ থেকে ৭ ফুট পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার তিন শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন জানিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী মজুদ রয়েছে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিদেরকে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা চূড়ান্ত করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে মধ্যে ওই তালিকা চূড়ান্ত হবে। তালিকা অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ত্রাণসমাগ্রী পৌঁছানো হবে।’

পটুয়াখালী জেলা খেপুপাড়া ও গলাচিপা উপজেলা ঝড়ের আঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেলা প্রশাসক অমিতাভ ভৌমিক জানান, ঝড়ে জেলার আংশিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৮ হাজার ২৩৮টি। সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৭ হাজার ৫৪০টি কাঁচা ঘরবাড়ি। ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়নের সংখ্যা ৭২। প্রথামিকভাবে দুর্গতের জন্য ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ও ২শ’ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছেনি।

মহাসেনের তাণ্ডবে নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় এক হাজারের মত কাঁচা ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তিনশতাধিক। সেখানেও পৌঁছায়নি ত্রাণসামগ্রী।

দ্বীপের তমরুদ্দি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান (ইউপি) আলাউদ্দিন বাবু বাংলামেইলকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবারের ঘূর্ণিঝড়ে তার ইউনিয়নের তিনটি গ্রামের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ৭০টি পরিবার খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে কোন ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছানো হয়নি।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার হাতিয়া উপকূল দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় মহাসেনের আঘাতে হাতিয়া দ্বীপের তিন শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ক্ষতিগ্রস্তরা তাদের তাদের ঘরবাড়িতে যেতে শুরু করেন। কিন্তু যাদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তারা সবাই এখন খোলা আকাশের নিচে বাস করছেন।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহিদুর রহমান শুক্রবার সকালে বাংলামেইলকে বলেন, ‘ঝড়ে দ্বীপের বিচ্ছিন্ন নিঝুমদ্বীপ, নলের চর, কেয়ারিং চর, ঢালচর, জাগলার চর, নঙ্গলিয়ার চর, চর বাসারসহ মূল ভূ-খণ্ডের ১২টি ইউনিয়নে এক হাজারের মতো কাঁচা ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝড়ে রাস্তাঘাট, গাছপাল্লার ও ফসলি জমির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শুক্রবারের মধ্যে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা চূড়ান্ত করা হচ্ছে। খুব দ্রুত ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানো হবে।’

এদিকে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের খোঁজ-খবর নিতে হাতিয়ায় যাচ্ছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আজিম গ্রুপ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফজলুল আজিম। তিনি ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন।

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খালিদ মেহেদি হাসান জানান, উপজেলার মোহাম্মদপুর, চরক্লার্ক, চরবাটা, চরজুবলি ইউনিয়নে ঘুর্ণিঝড় মহাসেন আঘাত হানে। এ সময় কয়েক শতাধিক কাঁচাঘর বিধ্বস্ত হয় এবং শতাধিক গাছ উপড়ে পড়ে। বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ফসলের মাঠে পানি জমেছে- যার কারণে কৃষকরা অনেকটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে ক্ষতিগ্রস্তদের পরিমাণ যাচাই করে সহযোগিতা করা হবে।’

কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল আউয়াল জানান, ঝড়ের আঘাতে উপজেলার প্রায় কয়েকশ’ কাঁচাঘর বিধ্বস্ত ও বেশ কিছু গাছপালা উপড়ে পড়েছে।


আরএম/১৭/৫-০১

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সালাহ্উদ্দিন লাভলুর ধারাবাহিক নাটক 'কবুলীয়তনামা'

পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট ২টি গল্প

নাচো নাচো (রিমিক্স)