টানা পঞ্চমবারের মতো ফাইনালে চেন্নাই




প্রস্তুতি : খেলা (প্রতিমুহূর্ত.কম)


ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (আইপিএল) মানেই রগরগে উত্তেজনা, দর্শকদের মঝে তুমুল উম্মাদনা, চিয়ার গার্লদের উদ্দাম নৃত্য। এসবই আরও বেশি ব্যাপকতা লাভ করে যখন খেলা সংকুচিত হয়ে আসে, মানে সেমিফাইনাল বা ফাইনাল খেলা হয়।

আইপিএলের এবারের আসরেরও প্রথম সেমিফাইনালও নিরাশ করেনি ক্রিকেটপ্রেমীদের। আজকের সেমিতে মুখোমুখি হয় গত পাঁচটি আসরের ফাইনালিস্ট চেন্নাই সুপার কিংস ও এবারের আসরে দুর্দান্ত খেলতে থাকা মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।

দিল্লীর ফিরোজ শাহ্‌ কোটলায় টস জিতে ব্যাটিং-এর সিদ্ধান্ত নেয় চেন্নাই অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনী। চেন্নাই ব্যাটসম্যানরা অধিনায়কের সিদ্ধান্তের ভালোই সম্মান করলেন। ওপেনিং-এ মুরালি বিজয় ও মাইক হাসি মিলে করলেন ৫২ রান। বিজয় তার স্বভাবসুলভ ফ্রি-সুইং শর্ট আজও খেলেছেন কিন্তু টাইমিং এর অভাবে বল চলে যায় ডিপ স্লিপ স্কয়ার লেগে দাঁড়িয়ে থাকা স্মিথের কাছে। পোলার্ডের বলে আউট হবার আগে বিজয় করেন ২৯ রান আর এর জন্য তিনি বল ব্যয় করেন ২০টি।

বিজয়ের আউটের পর দলের হাল ধরার জন্য ক্রিজে আসেন সুরেশ রাইনা। এরপর শুধুই উপরে ওঠার গল্প। হাসির সাথে রাইনা পুরো ২০ ওভার ধরে ব্যাট চালান। মুম্বাই বোলারদের উপর কখনো হয়েছেন চড়াও, কখনোবা সংযত। হাসি-রাইনা জুটি মালিঙ্গা-হারভজনদের পাত্তা না দিয়ে করেন অপরাজিত ১৪০ রান। মাইক হাসি ৮৬ রান করে ক্রিস গেইলের কাছ থেকে কমলা ক্যাপ ছিনিয়ে নেন। হাসির ৫৮ বলে খেলা এই ইনিংসে চার ছিল ১০টি আর ছয় ২টি। তুলানামুলকভাবে হাসির চেয়ে একটু বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন রাইনা। ৫ চার ও ৫ ছয়ে ৪২ বলে খেলেছেন ৮২ রানের এক অসাধারণ ইনিংস। ২০ ওভার শেষে হাসি-রাইনার ব্যাটিং নৈপুণ্যে চেন্নাই করে ১৯২।

মুম্বাই বোলারদের মাঝে একমাত্র কাইরন পোলার্ডই আজ সফল ছিলেন। তিনি মুরালি বিজয়ের একমাত্র উইকেটটি পান।

মুম্বাইয়ের সামনে ১৯৩ রানের লক্ষ্য, রানরেট ৯.৬৫!!! কিন্তু অসম্ভবকেই যে সম্ভব করাটাই টি-২০ ক্রিকেটের আরেক নাম। ইনজুরির কারণে আজও মাঠে নামেননি শচীন। গত কিছু ম্যাচে ভালো খেলা টারে আর স্মিথের উপর ভরসা করতেই ভরসা পাচ্ছিলো মুম্বাই সমর্থকরা। কিন্তু দলীয় ১২ রানেই টারের উইকেট হারায় মুম্বাই, বোলারের নাম মরকেল। এরপর স্মিথ একাই খেলে গেছেন। দর্শকদের তখন মনেহচ্ছিল এ বোধহয় চেন্নাইয়ের ইনিংসেরই পুনরাবৃত্তি। কিন্তু না... দলীয় ৮৭ রানে স্মিথ ৬২ করে বিদায় নেন।

রবীন্দ্র জাজেদার প্রথম বলেই তিনি রাইনার হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে আসেন। ৬২ রানের এই বিস্ফোরক ইনিংস খেলার জন্য তিনি ব্যয় করেন মাত্র ২৮ বল, স্ট্রাইক রেট ২৪২.৮৫!!! স্মিথের এই ইনিংসে ৬ টি বাউন্ডারির সাথে ছিল ৫টি ওভারবাউন্ডারি। ফর্মে থাকা দীনেশ কার্ত্তিককেও সাজঘরে ফেরান জাজেদা। মুম্বাই অধিনায়ক রোহিত শর্মাও ৮ রানে আউট হলে মুম্বাইয়ের স্কোর দাঁড়ায় ১০১/৪। দলকে এই অবস্থা থেকে টেনে বের করে আনার চেষ্টা করেন মুম্বাইয়ের দুই তুরুপের তাস পোলার্ড ও রাইডু। দুজন মিলে ২৬ রান করে ভালো সম্ভাবনাও জাগাচ্ছিলেন। ২৪ রান করে পোলার্ড আউট হলে সব দায়িত্ব গিয়ে পড়ে রাইডুর উপর। এবারের বোলারের নামও জাজেদা।

চাপের ভারেই হয়তো রাইডুও দলকে ১৪৪ এ রেখেই বিদায় নিলেন। এরপর শুধুই ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়া। মুম্বাইয়ের শেষ ৫ ব্যাটসম্যান রান করেন ৬ তারমাঝে মিশেল জনশনই করেন ৬ আর বাকী সবাই শূন্য। মুম্বাই ১৮.৪ বলে ১৪৪ রানেই অলআউট। চেন্নাই ম্যাচ জিতে যায় ৪৮ রানে, সেই সাথে নিশ্চিত হয় টানা পঞ্চম বারের মতো ফাইনাল খেলার স্বপ্নও।

চেন্নাই বোলারদের মাঝে জাজেদা ও ব্রাভো ৩টি করে উইকেট পান। মহিত শর্মাও তুলে নেন ২ উইকেট। এছাড়া ১টি করে উইকেট পান মরকেল ও মরিস।

৮৬ রানের ইনিংসের জন্য মাইক হাসিএ হাতে প্লেয়ার অফ দ্যা ম্যাচের পুরষ্কার যায়।

প্রথম সেমিতে মুম্বাইকে ৪২ রানে হারিয়ে এবারের আইপিএলে চেন্নাই-ই প্রথম ফাইনালে নাম লিখালো। টানা দুইবারের চ্যাম্পিয়ন ও টানা পাঁচবার ফাইনাল খেলা চেন্নাই এখন তৃতীয় শিরোপার জেতার স্বপ্নে বিভোর।


প্রতিবেদন : নিপুণ কাওসার, বিভাগীয় সম্পাদক, খেলা

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সালাহ্উদ্দিন লাভলুর ধারাবাহিক নাটক 'কবুলীয়তনামা'

পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট ২টি গল্প

নাচো নাচো (রিমিক্স)