বিশ্বে বছরে ১৩০ কোটি টন খাবার অপচয়



প্রস্তুতি: আর্ন্তজাতিক (প্রতিমুহূর্ত.তম)

সারাবিশ্বে প্রতি বছর যে পরিমাণ খাবার উৎপাদিত হয়, এর তিনভাগের এক ভাগ মানুষ খেতে পারে না। এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরবরাহের সময় নষ্ট হয় বা ভোক্তারাই তা অপচয় করে। এভাবে প্রতি বছর ১৩০ কোটি টন খাবার অপচয় হয়।

গত বছর ২০ থেকে ২২ জুন ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরিওতে টেকসই উন্নয়ন নিয়ে অনুষ্ঠিত রিও-২০ শীর্ষ সম্মেলনে জাতিসংঘের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, উত্তর আমেরিকা ইউরোপের ভোক্তা সাধারণ প্রতি বছর প্রায় ২২ কোটি ২০ লাখ টন খাবার ভালো তাজা অবস্থায় ফেলে দেয়। যা গোটা সাব-সাহারা অঞ্চলে প্রতি বছর উৎপাদিত খাদ্যের (২৩ কোটি টন) কাছাকাছি

গত বছর সুইডিশ ইনস্টিটিউট অব ফুড এন্ড বায়োটেকনোলজি (এসআইকে) ফুড এন্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের একদল গবেষকের (এফএও) গবেষণার ওপর ভিত্তি করে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, উৎপাদনস্থল থেকে ঘরের খাবার টেবিল পর্যন্ত যেতে যে লম্বা সময়ের দরকার পড়ে, এতে এই খাবার নষ্ট অপচয় হয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রকৃতপক্ষে বেশিরভাগ খাবার নষ্ট হয় মধ্য উচ্চ আয়ের দেশে। সেখানকার ভোক্তারা ভালো তাজা খাবারও ফেলে দেয়। নিম্নআয়ের দেশের মানুষ খাবার কম অপচয় করে, তবে পরিবহনের সময় খাবার নষ্ট হয় বেশি।  

ইউরোপ উত্তর আমেরিকার মাথাপিছু একজন লোক বছরে ২৮০ থেকে ৩০০ কেজি খাবার অপচয় করে। যেখানে আফ্রিকার গোটা সাব-সাহারা এবং দক্ষিণ দক্ষিণ এশিয়ায় মাথাপিছু খাবার অপচয় হয় তার অর্ধেকের (বছরে ১২০ থেকে ১৭০ কেজি) মতো

এসআইকের গবেষক জনি গুস্তাভসন দাবি করেন, কয়েকটি ধাপে খাবার নষ্ট অপচয় হয়ে থাকে। যেমন : কৃষিকাজে, ফসল কাটার পর, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বিতরণ-পরিবহন এবং সবশেষে ভোক্তা পর্যায়ে খাবার অপচয় হয়।

 তার ভাষ্যমতে, উন্নয়নশীল দেশে ফসল কেটে ঘরে তোলা প্রক্রিয়াজাতকরণ পর্যায়ে ৪০ শতাংশের বেশি খাবার নষ্ট হয়। আর শিল্পোন্নত দেশে ৪০ শতাংশের বেশি খাবার অপচয় ঘটে খুচরা বিক্রয়স্থল ভোক্তা পর্যায়ে

জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির অধীনে প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তারা তাদের মোট কেনা খাবারের ২৫ শতাংশ ফেলে দেয়। অন্যদিকে যুক্তরাজ্যের ভোক্তারা ফেলে দেয় মোট কেনা খাবারের এক-তৃতীয়াংশ। এর কারণ, বাজারে নানা বিপণন প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে ক্রেতারা চাহিদার চেয়ে বেশি খাবার কেনে। মেয়াদোত্তীর্ণ সময়ের প্রতি লক্ষ্য রেখেও তারা অনেক খাবার ফেলে দেয়।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনটির তথ্য মতে, উন্নয়নশীল দেশের খাদ্য উৎপাদনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখেন ছোটখাট কৃষকরা

প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়, তাদের উৎপাদিত খাদ্যসামগ্রী যেন দ্রুত পরিবহন বিপণন সুবিধা পায়, সেদিকে নজর দেয়া প্রয়োজন। ''ভবিষ্যতে কিভাবে দুর্ভিক্ষ এড়ানো যাবে'' শীর্ষক প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ইউরোপ উত্তর আমেরিকার দেশগুলোতে প্রতি বছর খাবারযোগ্য ২২ কোটি ২০ লাখ টন খাদ্যদ্রব্য ফেলে দেয়া হয়। অথচ আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলে প্রতি বছর মোট উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যের পরিমাণ ২৩ কোটি টন। 

এছাড়া মধ্য উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে প্রতিবছর ব্যাপক পরিমাণে খাবার অপচয় হয় এবং খাওয়ার উপযোগী থাকা সত্ত্বেও অনেক খাবার ফেলে দেয়া হয়। কিন্তু নিম্নআয়ের দেশগুলোতে ভোক্তারা অনেক কম খাবার অপচয় করেন এবং বেশিরভাগ নষ্ট হয় প্রাথমিক মধ্যপর্যায়ে।

ডেস্ক রিপোর্ট: আব্দুল্লাহ আল জুবায়ের, নিউজরুম এডিটর
এজে- ১৮/৫-১


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সালাহ্উদ্দিন লাভলুর ধারাবাহিক নাটক 'কবুলীয়তনামা'

পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট ২টি গল্প

নাচো নাচো (রিমিক্স)