পিকেএসএফ-এর আজীবন সম্মাননা পেলেন ডেপুটি স্পিকার মীর শওকত আলী





প্রস্তুতি: অর্থনীতি (প্রতিমুহূর্ত.কম)

আজ ১৬ মে ২০১৩ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের হল অব ফেমে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর ২৩ বছর পূর্তি উদ্যাপন উপলক্ষে পাঁচ দিনব্যাপী পিএকেএসএফ উন্নয়ন মেলা ২০১৩র সমাপনী অনুষ্ঠানে আজীবন সম্মাননা হিসেবে পেয়েছেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মীর শওকত আলী। 

সম্মাননায় পুরস্কার হিসেবে সম্মাননা সনদ ও ক্রেস্ট গ্রহণের পর তিনি বলেন, ‘পিকেএসএফ-এর কাছে আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। মুক্তিযুদ্ধের সময় খুব কাছ থেকে মানুষের জীবনযাত্রা দেখার সুযোগ হয়েছিল আমার। তখনই উপলব্ধি করেছিলাম, মানুষকে সহযোগিতা করা উচিত। আমরা যদি জনগণকে সাহায্য করতে পারি, তাহলেই জনগণের উন্নয়ন সাধিত হবে। তবে সরকারের পক্ষে সব জনসাধারণকে সুযোগ দেওয়া সম্ভব নয়।

তিনি আরও বলেন, যে সরকার জনগণের জন্য বেশি সুযোগ সৃষ্টি করবে, সেই সরকার তত সফল।স্থানীয় সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘সংসদ সদস্যরা যদি দক্ষ না হয়, তাহলে জনসাধারণের সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়।

অনুষ্ঠানে হতদরিদ্রদের উন্নয়নের স্বার্থে তাদের সমস্যাগুলো নিয়ে নিয়মিত লেখার জন্য সম্মাননা পেয়েছেন লেখক এএসএম ইউনুস। পিকেএসএফ-এর পক্ষ থেকে তাকে একটি সম্মাননা সনদ, ক্রেস্ট ও ৫০,০০০ টাকা প্রদান করা হয়।

শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আবদুল করিম। তিনি বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি পিকেএসএফ উন্নয়ন মেলা ২০১৩উদ্বোধন করেন। জন্মলগ্ন থেকে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান গড়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছে পিকেএসএফ। এজন্য দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছি আমরা। আমাদের ২৭২টি সহযোগী সংস্থা রয়েছে। ইতিমধ্যে পিকেএসএফ ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে কাজ করি। আমাদের এবারের উন্নয়ন মেলায় ১২২টি স্টল ছিল। এখানে বিপুল দর্শনার্থীর সমাগম ঘটেছে। পাশাপাশি তৃণমূল পর্যায়ের অনেক সংস্কৃতি কর্মী অংশ নিয়েছে। আমরা এই আয়োজনকে সফল হিসেবেই দেখছি।

সেমিনারে  অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বল, ক্ষুদ্র ঋণ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চালু হলেও সাফল্যের মুখ দেখেনি। কিন্তু বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে সফল। আমাদের দেশে ক্ষুদ্র ঋণ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা পালন করছে। ক্ষুদ্র ঋণ দিয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি ও দারিদ্রবিমোচনে (পিকেএসএফ) নব্বই দশক থেকে ভূমিকা রাখছে
 
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখন দুর্যোগপ্রবণ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এ দেশে এখন ব্যাপক নৈরাজ্য চলছে। এ কারণে প্রতিনিয়ত উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পিকেএসএফ-এর মতো প্রতিষ্ঠান উন্নয়নের জন্য কাজ করলেও বর্তমান অস্থিতিশীল পরিবেশের জন্য তা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
আশা করি, এ অবস্থার অবসান হবে এবং পিকেএসএফ আগামীতেও তাদের সাফল্য অব্যাহত রাখতে সক্ষম হবে।

সমাপনী আয়োজনে সভাপতি ছিলেন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ।

তিনি বলেন, “পিকেএসএফ প্রতিষ্ঠান ও কর্মসূচি দুটোকেই প্রাধান্য দেয়। আমরা নিরলসভাবে কাজ করে এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে টেকসই করার চেষ্টা করছি। আমরা সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছি, তারা নিচ্ছে। পিকেএসএফ বাংলাদেশে ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে বিরাট ভূমিকা পালন করছে। কর্মসংস্থানকে সহায়তা করা ও দারিদ্র বিমোচনে ভূমিকা রাখায় পিকেএসএফ অবদান রেখে চলেছে। 

তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্যসেবা ক্ষেত্রে পিকেএসএফ-এর একটি স্বাস্থ্য টিম আছে। এই প্রক্রিয়াটি বাস্তবায়নের জন্য আমরা সহযোগী সংস্থার সহায়তা নিয়ে কাজ করছি। আমাদের লক্ষ্য, মানুষের পাঁচটি মৌলিক অধিকার নিশ্চিতকরণে কাজ করা। 

তিনি বলেন, প্রতি বছর বাজেট প্রণয়নে অর্থনীতি সমিতি থেকে কিছু প্রয়োজনীয় তালিকা দিই। এর মধ্যে অন্যতম হলো কর্মসংস্থান। কৃষিজীবীদের আগে শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হতো না। তাদেরকে শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য সম্প্রতি শ্রম আইনে তা বাস্তবায়ন করা হয়। আমরা বিশ্বাস করি, মানুষকে বাদ দিয়ে উন্নয়ন সম্ভব নয়। পিকেএসএফ-এর সব কর্মকা-ই অর্থমন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। তাই আমাদেরকে সার্বিক সহায়তা প্রদানের জন্য অর্থমন্ত্রীকে আমি ধন্যবাদ জানাই।
এই আয়োজনে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি।

তিনি বলেন, ‘উন্নয়ন মেলা এখন বৃহৎ পরিসরে হচ্ছে। এজন্য পিকেএসএফকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাই। দারিদ্র বিমোচনে গত ২৩ বছর ধরে পিকেএসএফ কাজ করে যাচ্ছে। দারিদ্রের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে চিকিৎসা, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ মানুষের মৌলিক সব অধিকার। আমরা অনেকেই জানি, এ দেশে জঙ্গীবাদের উত্থান হয় ২০০১-২০০৬ সালের মধ্যে। এর অন্যতম কারণ দারিদ্র।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান সময়ে যারা নাশকতা করছে এবং এসব কর্মকা-ে যাদেরকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, তারা সবাই দরিদ্র। এ বিষয়গুলো আমাদের ভাবতে হবে। আমার বিশ্বাস, আগামী দিনেও দারিদ্র বিমোচনে সামগ্রিক ভাবনা মাথায় রেখে পিকেএসএফ আরও অনেক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করবে।

সমাপনী আয়োজনে সবশেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. জসীম উদ্দিন। পিকেএসএফ উন্নয়ন মেলার পঞ্চম ও শেষ দিনে দুপুরে অতিদরিদ্র উপকারভোগীদের সন্তানদের (২০১৩ সালে ৪৩৩ জন) এককালীন ১৫,০০০/- টাকা শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করে।

এডিট ও রিপোর্ট: আব্দুল্লাহ আল জুবায়ের
এজে- ১৬/৫-৩

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সালাহ্উদ্দিন লাভলুর ধারাবাহিক নাটক 'কবুলীয়তনামা'

পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট ২টি গল্প

নাচো নাচো (রিমিক্স)