কুষ্টিয়ায় শতাধিক চাউল মিল মালিকের জামানত বাজেয়াপ্ত

প্রস্তুতি :  অর্থনীতি (প্রতিমুহূর্ত.কম)

আমন মৌসুমে সরকারে সাথে চুক্তি করেও শেষ পর্যন্ত বরাদ্দকৃত চাল গোডাউনে সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়েছে কুষ্টিয়া জেলার শতাধিক মিল মালিক। ইতিমধ্যে এসব মিল মালিকের জামানত বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এছাড়া শাস্তি হিসেবে আগামী ১ বছর এসব মিল মালিক বোরো ও আগামী আমন মৌসুমে কোন বরাদ্দ পাবে না। তবে মিল মালিকরা জানিয়েছেন, চুক্তি করেও তারা শেষ পর্যন্ত লোকসানের কারণেই চাল সরবরাহ করেননি।

আমন মৌসুম শেষ হয়েছে কয়েক মাস আগে। ইতিমধ্যে শুরু হতে চলেছে বোরো সংগ্রহ অভিযান। তবে জেলার শতাধিক মিল মালিক চলতি বোরো মৌসুমে কোন বরাদ্দ পাচ্ছেন না।

জেলা খাদ্য অফিসের একটি সুত্র জানায়, সদ্য শেষ হওয়া আমন মৌসুমে  চুক্তি অনুযায়ী সরকারি গোডাউনে চাল দিতে ব্যর্থ হওয়ায় আগামী ১ বছর সরকার এসব মিল মালিকের সঙ্গে কোন প্রকার চুক্তি করবে না, বরং এসব মিলকে কালো তালিকাভুক্ত করে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুষ্টিয়া সদর উপজেলাসহ গোটা জেলায় সবমিলিয়ে ৯৭ জন মিল মালিক সরকারের সাথে চুক্তি করেও চাল সরবরাহ করেনি। এসব মিলের বেশির ভাগই খাজানগর এলাকায় অবস্থিত। অন্যান্য বছর চাল সরবরাহ করলেও আমন মৌসুমে তারা ১ কেজি চালও সরবরাহ করেনি বলে জানা গেছে।

চাল সরবরাহ না করার কারণ হিসেবে মিল মালিকরা বলেন, আমন মৌসুমে সরকার চালের দাম নির্ধারণ করে ২৬ টাকা। সে সময়  খোলাবাজারে চালের দাম ছিল ২৭ থেকে ২৮ টাকা।
মালিকরা বলেন, চাল সরবরাহ করলে তাদের সব মিলিয়ে  কেজি প্রতি ২ থেকে ৩ টাকা লোকসান হতো। এ কারনে তারা গোডাউনে চাল সরবরাহ করেননি। জামানত বাজেয়াপ্ত হলেও চাল সরবরাহ করলে আরও বেশি লোকসান গুনতে হতো বলে দাবী করেছেন মালিকরা।

খাজানগর এলাকায় অবস্থিত ভাই ভাই রাইস মিলের একটি সুত্র জানিয়েছে, তাদের মত অনেকেই আমন মৌসুমে সরকারের সাথে চুক্তি করেও চাল সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাদের  মিলের নামে ৭ টন ৩৫০কেজি চাল বরাদ্দ থাকলেও শেষ পর্যন্ত তারা তা সরবরাহ করে নি।

শুধু ভাই ভাই রাইস মিলই নয়, খাজানগর এলাকার মায়ের দান রাইস মিল ৭ টন ৩৫০ কেজি ও রহমত রাইস মিল ৮ টন ২৫০ কেজি চাল সরবরাহের চুক্তি করলেও তা রক্ষা হয় নি।

এ মিল দুটির মালিক জানান, আমন মৌসুমে ধানের বাজার বেশি থাকায় চাল সরবরাহ করতে পারেননি তারা। একজন মালিক বলেন, ধান কিনে তা থেকে চাল তৈরি করতে সরকারি যে রেট নির্ধারণ করা হয়েছিল তার থেকে বেশি খরচ পড়ছিল। লোকসানের ভয়ে তারা চাল সরবরাহ করতে পারেননি।

কুষ্টিয়া বড় বাজার খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ নেওয়াজ জানান, তার গোডাউনে ২০ জন মিল মালিক কোন প্রকার চাল সরবরাহ করেনি। এসব মিল মালিকের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে যাবে বলে জানান তিনি। এছাড়া আগামী এক বছর তারা কোন সংগ্রহ অভিযানে অংশ নিতে পারবে না। তাদেরকে এক বছরের জন্য কালো তালিকাভুক্ত করা হবে।

একাধিক সুত্র জানিয়েছে, অবৈধ সুবিধা নিয়ে জেলা খাদ্য অফিসের কর্মকর্তা আতিয়ারসহ আরও কয়েকজন আমন মৌসুমে চাল দিতে ব্যর্থ হয়েছে এমন মিল মালিকদের ফের ফিটলিষ্টে নাম তালিকাভুক্ত করার জন্য দৌঁড়ঝাঁপ করছে। তবে সরকার থেকে কড়া সতর্কবানী দেয়ায় শেষ পর্যন্ত কোন মিল মালিক বোরো মৌসুমে চাল দিতে পারবে না বলে সুত্র জানিয়েছে।

জেলা খাদ্য অফিসের এক কর্মকর্তা জানান, যারা চাল দিতে পারেননি তাদের সাথে বোরো মৌসুমে কোন চুক্তি করবে না সরকার। এ ব্যাপারে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুজা আলমের সাথে কথা বলতে অফিসে গেলে পিয়ন জানায় স্যার ছুটিতে আছেন।



প্রতিবেদন : হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
সম্পাদনা : আতিক আহম্মেদ অর্পণ

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সালাহ্উদ্দিন লাভলুর ধারাবাহিক নাটক 'কবুলীয়তনামা'

পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট ২টি গল্প

নাচো নাচো (রিমিক্স)