অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে পাঞ্জাব

প্রস্তুতি : খেলা  (প্রতিমুহূর্ত.কম)---

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের আজকের একমাত্র খেলায় মুখোমুখি হয় কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব ও দিল্লী ডেয়ারডেভিলস। ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট এ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টস জিতে দিল্লী অধিনায়ক মাহেলা জয়বর্ধনে ফিল্ড করার সিদ্ধান্ত নেয়। গত কয়েক ম্যাচে ভালো খেলা পাঞ্জাব ব্যাটিং আমন্ত্রণকে সাদরে গ্রহণ করে।

গত ম্যাচ জয়ের প্রধান কারিগর পাঞ্জাব অধিনায়ক এডাম গিলক্রিস্ট আজও ৪২ রানের একটি চমৎকার ইনিংস খেলেছেন। ২৬ বলের এই ঝড়ো ইনিংসে ছিল ৫টি চারের মার ও ২টি ছয়ের মার। শন মার্সের সাথে অনেকটা একতরফা ভাবেই গড়ে তোলেন ৬০ রানের ওপেনিং জুটি। ৬০ রানের এই জুটির সিংহভাগই আসে গিলক্রিস্টের ব্যাট থেকে আর এই জুটিতে মার্সের অবদান মাত্র ১৪ রান। পাঠানের বলে গিলি আউট হবার পর ব্যাট করতে আসেন গত ম্যাচ জেতানো আরেক ব্যাটসম্যান আজহার মাহমুদ। কিন্তু আজ তেমন কিছুই করতে পারলেন না তিনি। মাত্র ৯ রানেই নিজের উইকেটটি নেহেরার বলে বিসর্জন দিয়ে আসেন। হঠাতই স্ট্রোক প্লেয়ারের খেতাব পাওয়া ডেভিড মিলার আজও ২৪ বলে ৪৪ রানের এক বিস্ফোরক ইনিংস খেলেন। ৪৪ রানের পথে তিনি ৩টি চারের সাথে হাত খুলে মেরেছেন ৪টি বিশাল ছয়। ক্রিজের অন্যপ্রান্তে তখনো ছিলেন ওপেনার মার্স। আজ তিনি একটু সংযতই ছিলেন। ৪৪ বলে ৪৫ রান করে তিনি আউট হবার পর সতীস ২২ রান করলে পাঞ্জাব শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ১৭১ রানের এক বিশাল স্কোর গড়ে তোলে।

দিল্লীর বোলারদের মাঝে আজ পেসারদের আধিপত্যই ছিল বেশি। পাঞ্জাবের যে চারটি উইকেটের পতন হয়েছিল তার সবকটিই নিয়েছেন পেসাররা। আশীষ নেহেরা ২টি ও পাঠান, মরকেল ১টি করে উইকেট পান। জাদভ ৪ ওভার বল করে ৩৮ রান দিলেও আজ কোন উইকেটের দেখা পাননি।

দিল্লী তাদের ব্যাটিং লাইনাপের উপর একরকম এক্সপেরিমেন্টই চালাচ্ছে। মাহেলা নামছেন ওপেন করতে, ডেভিড ওয়ার্নারকে নামানো হচ্ছে চার নাম্বারে, পাঠানকে খেলানো হচ্ছে তিনে। আজও তারই ধাবাহিকতায় বিশ্বের অন্যতম ধ্বংসাত্মক ওপেনার বীরেন্দ্র শেবাগকে নামানো হল পাঁচে। হয়তো এটা তাদের গেইম প্লানেরই একটি অংশ।

আজ দিল্লীর হয়ে ওপেন করতে নামেন মাহেলা ও চাঁদ। দলীয় ১১ রানের মাথায় চাঁদ ৭ করে বিদায় নিলে ক্রিজে আসেন বাঁহাতি বোলিং অলরাউন্ডার ইরফান পাঠান। ইরফান পাঠান ১ ও ডেভিড ওয়ার্নার ০ (শূন্য) রানে আউট হলে দিল্লীর স্কোর চোখের নিমিষেই হয়ে যায় ৪ ওভারে ৩ উইকেটের বিনিময়ে ১২!

এ অবস্থায় দলের হাল ধরার জন্য আসেন অভিজ্ঞ শেবাগ। তিনি জুটি বাঁধেন ক্রিজের অন্যপ্রান্তে থাকা মাহেলার সাথে। শেবাগ আজ খেলছিলেনও ভালোই। কিন্তু ৩০ রান করেই আওয়ানার বলে গিলক্রিস্টের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ৩০ রানের এই ইনিংস খেলার জন্য শেবাগ ব্যয় করেন ২২ বল।  শেবাগের উইকেট পতনের পর রজার ও মাহেলা মিলে শুরু করেন ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াবার মিশন। মাহেলা ৩৯ রানে আউট হন। অর্ধশতক থেকে মাত্র ১ রান দূরে থেকে রজার আউট হবার পর মরকেল ও গৌতমের ১৩ ও ১২ রানের ইনিংসও জেতাতে পারেনি দিল্লীকে। পাঞ্জাব জয় পায় ৭ রানে।

পাঞ্জাব বোলারদের মাঝে আজকের চমক ছিল সন্দ্বীপ শর্মা। তিনি ৪ ওভার বোলিং করে ২৩ রানে তুলে নেন ৩ উইকেট, যার মাঝে জয়বর্ধনে, ওয়ার্নার ও পাঠানের মতো মহারথীদের নাম ছিল। এছাড়া প্রবীণ কুমার ১টি, আওয়ানা ১টি ও পীযুষ চাওলা ২টি উইকেট পান।

প্লেয়ার অফ দ্যা ম্যাচ হন সাম্প্রতি কিলার হয়ে ওঠা ডেভিড মিলার।

চলতি লীগর শুরুটা ভালো না হলেও শেষেরদিকে দুর্দান্ত খেলছে পাঞ্জাব। গতকিছুদিন ধরেই তারা পয়েন্ট টেবিলের দিকে চোখ রাখছে আর গরম নিঃশ্বাস ফেলছে হায়দ্রাবাদ ও বাঙ্গালুরের উপর। তাদের এই জয়ের মিশনই হয়তো তাদের প্লে অফে খেলার সুযোগ করে দেবে কারণ ক্রিকেটে শেষকথা বলে কিছু নেই। একটি ভালো ম্যাচই পারে পুরো লীগের হিসেব নিকেশ বদলে দিতে।

প্রতিবেদন : নিপুণ কাওসার, বিভাগীয় সম্পাদক, খেলা
এনকেঃ ১৬/০৬-১৪

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সালাহ্উদ্দিন লাভলুর ধারাবাহিক নাটক 'কবুলীয়তনামা'

পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট ২টি গল্প

নাচো নাচো (রিমিক্স)