পর্যটকহীন হয়ে পড়েছে পার্বত্য রাঙামাটি



প্রস্তুতি : সারাদেশ (প্রতিমুহূর্ত.কম)

দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ, হরতাল, অবরোধ এবং পার্বত্য এলাকার সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংস পরিস্থিতির কারণে পর্যটকহীন হয়ে পড়েছে পার্বত্য জেলা রাঙামাটি।

পার্বত্যাঞ্চলের রানী রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের স্বচ্ছ জলের সাথে পাহাড়ের হৃদতা দেখে অনেকে অভিভূত, একথা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে বিপর্যস্ত হতে চলেছে পার্বত্যাঞ্চলের রাজস্ব আয়ের অন্যতম মাধ্যম পর্যটন খাত। ছুটির দিনগুলোতেও রাঙামাটি পর্যটন কর্পোরেশন তাদের কাঙ্খিত পর্যটকের দেখা পাচ্ছেন না।

ঘন ঘন হরতালসহ গত কিছুদিন দেশব্যাপী বিভিন্ন সহিংস ঘটনায় ভরা মৌসুমেও পর্যটক কমে গেছে রাঙামাটিতে। এতে এবছর বার্ষিক আয়ের টার্গেট পূরণ নাও হতে পারে বলে মনে করছে পর্যটন খাতে কক্সবাজারের পর বেশি আয় করা প্রতিষ্ঠান রাঙামাটি পর্যটন কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ। তবে এবিষয়ে বেশ আশাবাদী দেখা গেল রাঙামাটি পর্যটন কমপেক্সের ব্যবস্থাপক আখলাকুর রহমানকে। তিনি জানান, হরতালসহ বিভিন্ন ঘটনায় পর্যটক কমে গেলেও পরিস্থিতি উন্নতি হলে মৌসুমের শেষ পর্যায়ে এসেও আমরা তা রিকভার করতে পারবো বলে আশা রাখছি।

এদিকে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, রাঙামাটি পর্যটন, রাজবন বিহার, ডিসি বাংলো, শুভলংসহ রাঙামাটির সব পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটক নেই বললেই চলে।

ঢাকা থেকে আসা ট্যুরিজম এন্ড ম্যানেজমেন্টের উপর পড়ালেখা করা পর্যটক ইমাম আলী জানান, ‘গত শুক্রবার আমরা রাঙামাটিতে আসি। এর কিছুদিন আগেও আমি এবং আমার সহধর্মিনী কানাডা থেকে ঘুরে আসি। কিন্তু রাঙামাটির প্রকৃতির যে অবকাঠামো রয়েছে তা আরো ভালভাবে ব্যবহার করতে পারলে এ স্থানগুলো আরো বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। এছাড়া উন্নতমানের আবাসন ব্যবস্থা, পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা গেলে পর্যটন খাত দেশের অন্যতম আয়ের উৎসে পরিণত হবে।’

ইমাম আলীর সহধর্মীনী অরোনইমা আলী জানান, বাংলাদেশের এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে কাজে লাগাতে পারলে আমার মনে হয় ভ্রমণের জন্য কাউকে আর বিদেশে যেতে হবে না। সিলেট থেকে আসা একদল তরুণ জানান, রাঙামাটির পাহাড় আর হ্রদের সৌন্দর্য সত্যিই মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই। তবে এ অঞ্চলে পর্যটন স্পটের সংখ্যা খুবই কম। তারা জানান, দেশি পর্যটকরা এ অঞ্চলে এসে স্বস্তি অনুভব করলে তবে বিদেশি পর্যটকরা এমনিতেই আসবে। 

পর্যটন ঘাটের বোটম্যান আলমগীর ও সেলিম জানান, ‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতির কারণে পর্যটক আসছে না। তাই আমরা সম্পূর্ণ বসে আছি। পর্যটক না আসলে আমাদের কোনো আয় হয় না।

পর্যটক কমপেক্সের টেক্সটাইল দোকানের বিক্রয়কর্মী প্রণিতা ত্রিপুরা জানান, গত একমাসে কোনো বিক্রি নেই বললেই চলে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতির কারণে পর্যটক মৌসুমেও পর্যটকের দেখা নেই। বিক্রি না হলে আমাদের বেতন ও নিতে পারবো না। বিক্রয়কর্মী শোভা মজুমদার বলেন, দেশের মধ্যে হরতাল ও সার্বিক পরিস্থিতির কারণে পর্যটকরা আসছেন না।

এদিকে, পর্যটন কমপেক্সের ব্যবস্থাপক আখলাকুর রহমান জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবে কেউ স্বজন নিয়ে বেড়াতে আসবেন না এটাই স্বাভাবিক। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পর্যটকরা আবারো আসবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি জানান, পর্যটনকে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে আরো আকর্ষণীয় করতে বেশকিছু প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে দেওয়া আছে। এরমধ্যে ৫০ করে থ্রি-স্টার মানের একটি হোটেল ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেছেন বলে তিনি জানান।


প্রতিবেদন : মোঃ নাছির উদ্দিন সোহেল, রাঙ্গামাটি জেলা প্রতিনিধি
সম্পাদনা : জামিল আশরাফ খান
এমএন/জেএ/১৯/০৫-১

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সালাহ্উদ্দিন লাভলুর ধারাবাহিক নাটক 'কবুলীয়তনামা'

পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট ২টি গল্প

নাচো নাচো (রিমিক্স)